|
|
|
|
সাংসদ তহবিল থেকে টাকা, গেরোয় থমকে সৌধ নির্মাণ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শিলদার ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলায় নিহত জওয়ানদের স্মৃতিতে সৌধ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সেপ্টেম্বরে শিলদার প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণা করেন। তারপর পনেরো দিনের মধ্যে মুকুল রায়ের সাংসদ তহবিল থেকে সৌধ তৈরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়ে যায়। কিন্তু তারপরেও সৌধ তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত দু’টি জটিলতার কারণে থমকে সৌধের কাজ। প্রথম সমস্যা হল, সাংসদ তহবিলের টাকায় সৌধ তৈরি করা যায় না। সেজন্য সরকারি নথিতে সৌধের নাম পরিবর্তন জরুরি। এক্ষেত্রে সৌধকে কমিউনিটি হল হিসেবে দেখালে সমস্যা থাকে না। সরকারি ভাবে নাম পরিবর্তন করা হলে কোনও সমস্যা নেই। নতুবা সরকারি নথিতে সৌধ হিসাবেই উল্লেখ রাখলে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “সকলেই জানবে সৌধ। কিন্তু সরকারিভাবে তা কমিউনিটি হল দেখিয়ে দিলে সমস্যা হবে না। ফলে এটা বড় কোনও বিষয় নয়।” দ্বিতীয় সমস্যাটি হল, ওই সৌধের নির্মাণ কার্য কোন দফতর করবে? পুলিশ না প্রশাসন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “আমরা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছি নির্মাণ কার্য কারা করবে। রাজ্য এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট দফতরের কথা জানিয়ে দিলেই দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে।” |
শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পিছনে এখানেই স্মৃতিসৌধ হওয়ার কথা।—ফাইল চিত্র। |
কেন এমন জটিলতা তৈরি হল? এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার সময় খেয়াল করেননি যে সাংসদ তহবিলের অর্থে কী কী কাজ করা যায়। তাই এই ভুলটি থেকে গিয়েছিল। তবে সরকারিভাবে নাম পরিবর্তন করে দিলে সমস্যার কিছু নেই। তাছাড়া বিশেষ অনুমতি নিয়ে তা করাও যায়। পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর, সৌধের কাজ নিয়ে জটিলতার পিছনে পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই দায়ী। তাছাড়াও জেলায় দুই দফতরের মধ্যে এখন অহি-নকুল সম্পর্ক। জেলা পুলিশও এখন নিজেদের খুশি মতো কাজ করার চেষ্টা করছে। আর তা মেনে নিতে রাজি নয় প্রশাসন। সম্প্রতি বন্যায় ত্রাণ দেওয়া নিয়েও পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যে মত বিরোধ দেখা দিয়েছিল। জেলা পুলিশ সুপার নিজে সর্বত্র ত্রাণ দিতে চেয়েছিলেন। যেখানে তিনি নিজে যেতে পারবেন না, সেখানে থানার পুলিশ কর্মীরা ত্রাণ দেবেন বলে জানান। যে কারণে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে চিড়ে, গুড়, ত্রিপল প্রভৃতি চাওয়াও হয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ গঠন হয়ে গিয়েছে। বিডিও, মহকুমাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা রয়েছেন। তাঁরা থাকতে পুলিশ কেন ত্রাণ দিতে যাবে। পুলিশের কাজ তো শান্তি রক্ষা করা। সে সব ছেড়ে কেন ত্রাণ বিলিতে এত ঝোঁক। ফলে পুলিশকে অতিরিক্ত ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া নিয়ে মতবিরোধও দেখা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের সৌধ নির্মাণে নির্মাণ কাজের দায়িত্বে কে থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংসদ তো টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কাজটি কে করবে সরকারিভাবে তার কোনও নির্দেশ আসেনি। এই পরিস্থিতিতে সৌধ নির্মাণের কাজ কে করবে, তা সুনির্দিষ্ট করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে জেলা প্রশাসন। তা জানার পরেই কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। |
পুরনো খবর: উন্নয়ন দিয়েই শান্তিরক্ষা, জঙ্গলমহলে বার্তা মমতার |
|
|
|
|
|