সংযোগকারী রাস্তা নির্মাণে টাকা, দ্রুত সেতু চালুর চেষ্টা লোয়াদায়
সেতু নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়েছিল ২০০৩ সালের মার্চ মাসে। কথা ছিল, ২ বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে। দশ বছর গড়িয়ে গেল। এখনও সেতু চালু করা যায়নি। নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হলেও জটিলতা তৈরি হয়েছিল সংযোগকারী রাস্তা তৈরি নিয়ে। অবশেষে জমিদাতাদের রাজি করা গিয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থও বরাদ্দ করেছে সরকার। জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “জমি অধিগ্রহণ করে সংযোগকারী রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকার অর্থ বরাদ্দ করেছে।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “সব কাজ শেষ করে এ বার দ্রুত সেতুটি চালু করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
ডেবরার সঙ্গে কেশপুর ও দাসপুরের সহজ যোগাযোগ গড়ে তুলতে লোয়াদায় কংসাবতী নদীর উপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। সেতু নির্মাণে ৬ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। অভিযোগ, এমনই অপরিকল্পিত জায়গায় সেতু নির্মাণে উদ্যোগী তৎকালীন প্রশাসন যে সংযোগকারী রাস্তা তৈরি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, দু’দিকে সেংযাগকারী রাস্তা তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ৬ একর জমির প্রয়োজন। যেখানে ৬২ জন কৃষকের জমি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর পর অবশ্য সকলেই জমি দিতে রাজি হয়েছেন বলে ডেবরা থেকে নিার্বচিত জেলা পরিষদ সদস্য বিবেক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

অ্যাপ্রোচ রোড হয়নি। তাই চালু হয়নি সেতু।—নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কথায়, “সেতুটি দ্রুত চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম। তিনি পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত অর্থ মঞ্জুর করে দিয়েছেন।” জমি অধিগ্রহণ ও রাস্তা তৈরির জন্য ২৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ধাপে প্রায় ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা জেলাকে দিয়েও দিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সময়ে সেতু চালু না করায় ও অপরিকল্পিত জায়গায় সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যে সেতু নির্মাণ করার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৬ কোটি টাকা সেখানে সংযোগকারী রাস্তা নির্মাণের জন্য অর্থ ব্যয় ধরা হল সেতু নির্মাণের প্রায় ৬ গুণ! আর জমির জন্য মানুষকে রাজি করাতে সময় লেগে গেল প্রায় দশ বছর! এরকম সমস্যার হতে পারে বলে আগে কেন বুঝতে পারেনি প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তৎকালীন জেলা পরিষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ারেরাও জেলা পরিষদের অর্থাৎ শাসকদলের প্রিয় পাত্র হয়ে থাকার জন্য কোনও বিরূপ মন্তব্য করেননি। তারই মাসুল দিতে হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশ মতো ২০০৩ সালের মার্চ মাসের পরেই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যায়। ২০০৫ সালে সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে যায়। বাকি থাকে কেবল একটি স্প্যান তৈরি। সেই সময় হঠাৎ লোহার দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ঠিকাদার আরও বেশি টাকা দাবি করে। কিন্তু প্রশাসন তা দিতে রাজি না হওয়ায় ওই একটি স্প্যান তৈরি না করেই কাজ ছেড়ে পালিয়ে যায় ঠিকাদার সংস্থাটি। যদিও ওইটুকু কাজ শেষ করাটা প্রশাসনের কাছে খুব একটা সমস্যার ছিল না। সমস্যা দাঁড়ায় সংযোগকারী রাস্তা তৈরি নিয়ে। কারণ, কিছু মানুষ জমি দিতে অস্বীকার করেন। যদিও পরবর্তীকালে সেই সমস্যা মিটেছে। এখন স্থানীয় মানুষ চান, দ্রুত সেতু নির্মাণ ও রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হোক। সেতুর উপর দিয়ে শুরু হোক যান চলাচল। তাহলে মেছোগ্রাম বা মেদিনীপুর দিয়ে দীর্ঘপথ ঘুরে একটি এলাকার মানুষকে অন্য এলাকায় যেতে হবে না। ফলে সময় যেমন বাঁচবে তেমনি সাশ্রয় হবে অর্থেরও। তাই সকলেই সেতু চালুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.