|
|
|
|
হতাশা ভেঙে জীবন গড়ুন, বেকারদের বার্তা মমতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
আর পাঁচটা প্রশাসনিক সভার মতোই একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা, কিছু উদ্বোধন, কিছু আশ্বাস, কিছু প্রতিশ্রুতিবন্যাদুর্গতদের সাহায্য ছাড়া শুক্রবার কোলাঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় নতুন কিছু ছিল না।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে পূর্ব মেদিনীপুরে আসেননি দিদি। তাই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনের মধ্যে একটা চাপা দুঃখ ছিল। তা পুষিয়ে দিতেই হয়তো শুক্রবার কোলাঘাটের প্রশানিক সভায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের থিকথিকে ভিড়। স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্বও নিয়েছেন তৃণমূলের কর্মীরাই। এক নজরে দেখলে কে বলবে প্রশাসনিক সভা। এমনকী কোলাঘাটের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি (এ বার হেরে গিয়েছেন) অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তদারকি করতে দেখা গেল। প্রাপকদের নিয়ে আসার দায়িত্বও ছিল জনপ্রতিনিধিদের কাঁধেই। যে-যার এলাকা থেকে উপভোক্তাদের নিয়ে এসেছেন। কোণে কোণে তাই জটলা। |
|
সভায় বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র। |
বেশ কিছু অন্য রকমের ছবিও পাওয়া গেল। যেমন, সভায় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারী উপস্থিত থাকলেও কোনও বক্তব্য রাখলেন না। আবার মুকুল রায়ের আসার কথা থাকলেও তিনি নেই। নেই আর এক মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। আবার অবাক করে দিয়ে আছেন শিউলি সাহা। বক্তা বলতে শুধু রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, তারপরে জেলাশাসক অন্তরা আচার্য আর তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী। শেষে পশ্চিমের জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি।
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের পরিচয় করিয়েই সাহায্যের তালিকা পড়তে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগেই বন্যার জলে প্রচুর পাঠ্যপুস্তক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তমলুক ব্লক অফিস সংলগ্ন সার্কেল অফিসে। সেই প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে বিডিওদের সতর্ক করে দেন তিনি। কৃষক, মৎস্যজীবীদের সব রকম ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “বন্যায় যাঁদের গরু, ছাগল আছে, তাঁদেরও অসুবিধা হয়। ৪৫ লক্ষ টাকার গো-খাদ্য বিলি করা হবে।” ভগবানপুর ২ ব্লকের ইটাবেড়িয়া লকগেট সংস্কার ছাড়াও বিভিন্ন খাল সংস্কারের পুরনো প্রতিশ্রুতি আওড়ান মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটালের মাস্টার প্লানের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “তেরোশো কোটি টাকা লাগবে। সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছি। টাকা এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। এর আগের সরকার মাস্টার প্ল্যান কার্যকরে উদ্যোগী হয়নি বলে কাজ হয়নি।” কেলেঘাই-কপালেশ্বরী সংস্কারের কাজ এনেকটাই এগিয়েছে বলে এ দিন দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান খোলার ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, “এ বার এমআরআই, স্ক্যান করার জন্য ন্যায্য মূল্যে ডায়াগনিস্ট সেন্টার করা হবে।” কন্যাশ্রী প্রকল্পের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বেকার যুবকদের বিশেষ ভাতা দেওয়ার কথা বলেন। মমতার কথায়, “বেকার যুবকদের জন্য এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক চালু করেছি। এদের বিভিন্ন ধরনের খরচ থাকে। সেই জন্য ভাতা দেওয়া হবে। নাম যুবশ্রী রাখলে কেমন হয়।” তারপর নিজেই সেটা শুধরে বসেন, “শ্রী তো মেয়েদের। দেখছি ওই প্রকল্পের কি নাম দেওয়া যায়।” বেকার যুবকদের উদ্দেশ্যে মমতার পরামর্শ, “হতাশা একটা রোগ। হতাশা ভাঙুন, জীবন গড়ুন।”
|
|
|
|
|
|