অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ কি শেষ পর্যন্ত কলকাতার দর্শকরা দেখতে পাবেন?
সোমবার দিল্লিতে খোদ ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলই তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করে দিলেন। সরাসরি কলকাতার নাম না করলেও তিনি বলে দেন “বিশ্বকাপ হওয়ার ক্ষেত্রে ঘাসের মাঠই বেশি গুরুত্ব পাবে। অ্যাস্ট্রোটার্ফ নয়।” পাশাপাশি ২০১৭-র যুব বিশ্বকাপ নিয়ে প্রথম সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “অ্যাস্ট্রোটার্ফে খেলা হলেও তা হতে হবে অত্যাধুনিক। যাতে ফুটবলারদের পেশি সংকোচন না হয়। খেলাটা হতে পারে।”
যে আটটি জায়গা প্রাথমিক ভাবে ২৪ দলের যুব বিশ্বকাপ সংগঠনের জন্য বাছা হয়েছে তার মধ্যে কলকাতা ছাড়াও আরও দু’টো শহরে কৃত্রিম ঘাসের মাঠ আছে। বেঙ্গালুরু এবং মুম্বই। দু’টো জায়গাতেই একেবারে নতুন টার্ফ বসানো হয়েছে। যুবভারতীর টার্ফই সবচেয়ে পুরনো। আই লিগের কোচেরা বারবার এই টার্ফ বদলের দাবি জানিয়েছেন, ফুটবলাররা এখানে চোট পাচ্ছেন বলে। জানা গিয়েছে, যুবভারতীর গ্যালারির নীচে যে হোটেল আছে তা-ও অন্তরায় বিশ্বকাপ করার ক্ষেত্রে। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট এ দিন বলে দিয়েছেন, “বিশ্বকাপ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ফুটবল ফেডারেশনকেই মাঠের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। এবং সেই কাজ শুরু করতে হবে কাল থেকেই।” কিন্তু তাৎপর্যের ব্যাপার, যুবভারতী আইএফএ-র নয়। রাজ্য সরকারের ক্রীড়া দফতরের। টার্ফ বদলাতে গেলে তিন-চার কোটি টাকা দরকার। ঘাসের মাঠ ফেরাতে গেলেও খরচ অনেক। টার্ফ তুলে নতুন মাটি দিয়ে ঘাস তৈরি করতে হবে। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও মান্ধাতা আমলের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক এখনও বদলাতে পারেনি ক্রীড়া দফতর। ফুটবল মাঠের টার্ফ এবং যুবভারতী সংলগ্ন হোটেল নিয়ে ক্রীড়া দফতর কতটা তৎপর হয় তার উপরই নির্ভর করছে শহরে যুব বিশ্বকাপ হওয়া। অনূর্ধ্ব -১৭ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দেশের ফুটবল পরিকাঠামোয় বদল আসবে বলার পাশাপাশি একটি চমকপ্রদ ঘোষণা করেন প্রফুল্ল। বলেন, “আমরা এ বার ক্লাব বিশ্বকাপ সংগঠন করার জন্য ঝাঁপাব। আমাদের লক্ষ্য ২০১৫-১৬ মরসুমের কাপ। জানুয়ারিতেই ফিফার প্রধান কার্যালয় জুরিখে গিয়ে ওই টুর্নামেন্ট করার জন্য দাবি জানাব। আমাদের ভাল সুযোগ আছে।”
ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়নরা খেলে। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট বলেন, “এখানে ক্লাব বিশ্বকাপ হলে সংগঠক দেশ হিসাবে আমাদের আই লিগ চ্যাম্পিয়নরাও খেলার সুযোগ পেয়ে যেতে পারে। তবে তাদের অবশ্যই ক্লাব লাইসেন্সিংসের যাবতীয় শর্ত পূরণ করতে হবে।”
অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলার জন্য এখন থেকেই ভারতীয় দলের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছে ফেডারেশন। শীর্ষকর্তা বলেন, “আমরা একটা অ্যাকাডেমি করব শুধু বিশ্বকাপে খেলার কথা ভেবেই। যুব দলকে নিয়মিত বিদেশে প্রশিক্ষণ আর খেলতে পাঠানো হবে। যুব বিশ্বকাপে ভাল করতে পারলে ভারতীয় ফুটবল অনেকটাই এগিয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্যই তো একেবারে জুনিয়র পর্যায় থেকে দেশের ফুটবলকে বিশ্ব পর্যায়ে তুলে আনা।” |