ফিফার কোনও পর্যায়ের বিশ্বকাপ ফুটবল ভারতে হবে আর তার খেলা দেশের ফুটবলের মক্কা কলকাতায় হবে না, সেটা ভাবতেই পারছেন না ফেডারেশন সচিন কুশল দাস। তবে ফেডারেশনের অন্যতম শীর্ষকর্তাকে ভাবাচ্ছে, যুবভারতীর মাঠের অ্যাস্ট্রো টার্ফ।
কৃত্রিম ঘাসের মাঠে ফিফা কোনও ম্যাচের আয়োজন করে না বলেই বিশ্ব ফুটবলমহলে চালু ধারণা। যদিও ফেডারেশন সচিব ফোনে সেটা অস্বীকার করে বলে দিলেন, “ফিফার গাইডলাইনে এমন কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই যে, কৃত্রিম ঘাসের টার্ফে ম্যাচ করা যাবে না। তবে সাধারণত আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ স্বাভাবিক ঘাসের মাঠেই হয়ে থাকে।” তিনি অবশ্য জানালেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ইতিমধ্যেই ফেডারেশনের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে যে, ২০১৭ যুব বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজনের কথা ভেবে যুবভারতীর মাঠকে স্বাভাবিক ঘাসের মাঠে ফের পরিণত করতে। আর সেটা যেন অত্যাধুনিকও হয়। ফেডারেশন সচিবের কথায়, “ভারতে যুব বিশ্বকাপ হবে আর ভারতীয় ফুটবলের মক্কা কলকাতায় বিশ্বকাপ ম্যাচ হবে না এটা আমরা ভাবতেই পারি না।”
ফেডারেশনের এই প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বললেন, “কলকাতায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ম্যাচ আমরা যে কোনও মূল্যে করব। তার জন্য যুবভারতীর মাঠ, স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোয় যা-যা অত্যাধুনিকরণের দরকার আমরা এআইএফএফের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে করব। সবচেয়ে বড় কথা, ভারতে যুব বিশ্বকাপের আটটা কেন্দ্রের মধ্যে আমরাই প্রথম ফেডারেশনের কাছে এখানকার পরিকাঠামোগত সমস্ত তথ্য সমেত কাগজপত্র পাঠিয়েছিলাম।”
চার বছর পরে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আয়োজনের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিন থেকেই ফেডারেশন ওই টুর্নামেন্টের জন্য ভারতীয় যুব দল তৈরির পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। ফেডারেশন সচিব বললেন, “দু’হাজার সতেরোয় সতেরো বছরের কম বয়স থাকবে এ রকম অন্তত পঞ্চাশ-ষাট জন প্রতিভাবান ফুটবলার আমরা এখন থেকেই খুঁজে বার করার কাজে নেমে পড়ব। এর জন্য দেশ জুড়ে বেশ কিছু স্পটারকে প্রথমে বাছা হবে। তাঁরা প্রতিভা খুঁজবেন।” ফেডারেশনের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রব বান-এর উপরও বিরাট ভরসা রাখতে চান কর্তারা। কোনও পর্যায়ের বিশ্বকাপ ফুটবলের মূলপর্বে এই প্রথম খেলবে ভারত। তার জন্য গোটা দেশে এক ডজন ফুটবল অ্যাকাডেমি করার চিন্তাও মাথায় রয়েছে ফেডারেশনের। এআইএফএফ সূত্রের খবর, এ রকম এক ডজন অ্যাকাডেমি করা হবে। তার মধ্যে তিনটে এখনই গোয়া, বেঙ্গালুরু আর কলকাতায় আছে। বকি ন’টার মধ্যে দু’টো এলিট অ্যাকাডেমি থাকবে। যার একটা কলকাতায় হতে পারে। ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত আবার বললেন, “বিশ্বকাপে খেলার যোগ্য দল কী ভাবে গড়ে তুলতে হয় সেটা জানার জন্য আমরা ফিফার সাহায্যও নেব। ওদেরই বলব, অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ দল গড়ে তোলার জন্য কী ভাবে এগোনো উচিত আমাদের?”
ভাইচুং ভুটিয়াও মনে করেন, বিশ্বকাপ আয়োজনের ঐতিহাসিক গৌরব অর্জনের পাশাপাশি ভারতের উচিত একইসঙ্গে নিজেদের শক্তিশালী একটা অনূর্ধ্ব-১৭ দল গড়ে তোলা। যাতে সংগঠক দেশ হিসাবে খেলতে নেমে তারা যেন মাঠেও ভারতীয় ফুটবলের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। “যুব বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়াটা ভারতীয় ফুটবলে ঐতিহাসিক ঘটনা। কিন্তু পাশাপাশি সেই টুর্নামেন্টে ভারতীয় দলও যেন ভাল খেলে সেটাও মাথায় রাখা উচিত। চার বছর হাতে সময় আছে। এখন থেকেই শক্তিশালী যুব ভারতীয় দল গড়ে তোলার কাজ শুরু হোক”, সংবাদ সংস্থাকে এ দিন বলেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ভাইচুং। |