ব্যাগি গ্রিনে চাপা পড়ল ইংরেজ দর্প
অ্যাডিলেড টেস্টটা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে দু’টো টুইট ভেসে উঠল।
প্রথমটা শেন ওয়ার্নের।
দ্বিতীয়টা স্যর ইয়ান বোথামের।
অ্যাডিলেডেও ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে যেতে দেখে ওয়ার্ন লিখে ফেললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ২-০ জিতছে। অভিনন্দন তোমাদের। মনে তো হচ্ছে ছোট্ট ট্রফিটার উপর একটা হাত রাখা হয়েই গেল।’
যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাল্টাটা এল। ইউনিবেট নামের এক বেটিং সংস্থার দর দেখে টুইটটা করেছেন বোথাম। চলতি অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের মহাবিপর্যয় দেখেও লিখে ফেলেছেন, ‘কাজটা খুব কঠিন। কিন্তু এখনই সব শেষ নয়। ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়ের বেটিং দর ৩০:১। একটা কামব্যাক দেখতে বেশ ভালই লাগবে।’
মজার ব্যাপার হচ্ছে, টুইটের দুনিয়ায় বোথাম বনাম ওয়ার্ন দিন দু’য়েক আগে থেকেই চলছে। ‘ইংল্যান্ড ৫-০ জিতবে’ বোথামের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে ওয়ার্ন এর মাঝেই টুইট করেছেন যে, বোথাম ঠিকই বলেছেন। ৫-০-ই জিতবে। শুধু টিম বাছাইয়ে ভুল হয়েছে। ইংল্যান্ড নয়, জিতবে অস্ট্রেলিয়া!
অ্যাডিলেড পর্যন্ত অন্তত ওয়ার্নের কথাটাকেই সত্যি ভাবতে ইচ্ছে করবে। যে ভাবে পরপর দু’টো টেস্টে দর্প ধুলোয় মিশে গেল ব্রিটিশ সিংহদের!
২১৮ রানে হারের লজ্জা, সিরিজের প্রথম দু’টো টেস্ট ধরলে সংখ্যাটা ৫৯৯ রানের। রবিবারের ২৪৭-৬ স্কোরের সঙ্গে এ দিন ৬৫ যোগ করতে না করতে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ। যার পর বিপর্যস্ত অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক টিমমেটদের বললেন, নিজেদের অন্তরাত্মার দিকে তাকাতে। কেভিন পিটারসেনকে জিজ্ঞেস করলেন, পাল্টা লড়াই দেওয়ার আগুন তাঁর মধ্যে এখনও বেঁচে আছে কি না? মিডিয়ার কাছে প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন, তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার সামনে উড়ে গিয়েছেন। চেষ্টা করবেন, পরবর্তী টেস্টগুলোতে বারুদ আমদানির।
যার প্রত্যুত্তর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া। বলা ভাল, দিয়ে রাখলেন কোচ ডারেন লেম্যান।

যত দিন ক্রিকেট খেলতেন, তাঁকে নিয়ে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে এমন কিছু হইচই হয়নি। কিন্তু কোচ লেম্যান আলাদা মর্যাদা পাচ্ছেন। শুধু অস্ট্রেলিয়ায় নয়। ইংরেজ ক্রিকেট সমাজেও। মাইকেল ভন, অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফের মতো প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটাররা বলে দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়া টিমটা এমন আহামরি নয়। কিন্তু এমন ক্ষুধার্ত মেজাজটা এনেছেন লেম্যান। ফ্লিনটফ যেমন টুইটে বলেছেন, ‘কয়েক মাসে কী ভাবে টিমটাকে বদলে দিল!’ সেই লেম্যান অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ড সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করে উঠে বলে দিলেন, পার্থেও জনসনের ভয়াবহ গতির সঙ্গে ভয়ঙ্কর স্লেজিংও ইংল্যান্ডের জন্য বরাদ্দ থাকবে। “ক্রিকেট টাফ গেম। টেস্ট ক্রিকেটটাও খুব টাফ। আমরা আমাদের খেলার ধরন মোটেও বদলাচ্ছি না।” অস্ট্রেলীয় কোচের বক্তব্য খুব সাফ ব্যবস্থা নিতে হলে আইসিসি আছে। তারা নেবে। অস্ট্রেলিয়া স্লেজিং যেমন চালাচ্ছে, চালিয়ে যাবে।
অ্যাডিলেডে স্টুয়ার্ট ব্রড থেকে শুরু করে বেন স্টোকসজনসনের পেস ও স্লেজিং, কোনও কিছুর থেকেই কেউ রেহাই পাননি। জনসন নিজে বলছেন, “এই ভয় ধরানোর ফ্যাক্টরটা আমাকে বাড়তি সাহায্যই করছে।” চর্তুদিক থেকে সমালোচনায় কুকদের এমনিই বেশ সঙ্গীন অবস্থা। পরপর শোচনীয় হার দেখে মিডিয়া লিখে ফেলেছে, সিরিজ জেতার চেয়েও ইংল্যান্ডের উচিত জনসনের সামনে চরিত্রটা বার করে আনা। কাঠিন্যটা দেখানো।
কিন্তু সেটা করতে হলে, পার্থ থেকে পরের তিনটে টেস্টই জিততে হবে। পার্থের রেকর্ডটাও আবার ইংল্যান্ডের শত্রু। বারো বারের মধ্যে পার্থে ইংল্যান্ড জিতেছে মোটে এক বার, তা-ও যখন কেরি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজের ধাক্কায় অস্ট্রেলিয়া দুর্বল হয়ে পড়েছিল!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া ৫৭০-৯ (ডি) ও ১৩২-৩ (ডি)। ১৭২ ও ৩১২ (প্রায়র ৬৯, সিডল ৪-৫৭)

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.