পঁয়ত্রিশ বছর আগের সেই ইনিংসের ভিডিওর খোঁজ করছেন কুকরা? করতে পারেন। ১৯৭৮-এ গাওস্কর, বিশ্বনাথ, বেঙ্গসরকরদের সেই ইনিংসের ভিডিও থেকেই যে এখন অ্যাডিলেড টেস্টে বাঁচার রসদ পেতে পারেন তাঁর দলের ব্যাটসম্যানরা। না হলে বৃষ্টিদেবতার প্রার্থনা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
তখন ছ’দিনে টেস্ট হত। ওভার হত আট বলে। ৪৯৩ রানের টার্গেট নিয়ে নেমে বিষেণ সিংহ বেদীর ব্যাটসম্যানরা চতুর্থ ইনিংসে তুলেছিলেন ৪৪৫। অ্যাডিলেডে চতুর্থ ইনিংসে এটাই সবচেয়ে বড় রান। এই টেস্ট জিততে হলে অ্যাডিলেডে কুকদের সেই নজির তো ভাঙতেই হবে, গড়তে হবে নতুন রেকর্ডও। কিন্তু সে বার সানি-ভিশিদের সামনে প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন ওভার বল করে দু’উইকেট নেওয়ার পর চোটের ফলে বাকি ম্যাচে আর মাঠে ছিলেন না জেফ টমসন। এ বার গোটা ম্যাচেই আছেন মিচেল জনসন। তফাত এটাই। |
জনসনদের ঝামেলা থামাতে নামতে হল আম্পায়ারদের। ছবি: এএফপি। |
আগের দিন ইংরেজদের ‘ভেজে’ খাওয়ার হুমকি দেওয়া পেস-রাক্ষস জনসন দিনের শেষ ওভারে তাঁর পরপর দুটো বল হুক ও পুল-এ বাউন্ডারি হতে দেখে যা বাক্যবাণ ছোড়া শুরু করেন এ দিন অপরাজিত ব্যাটসম্যান ম্যাট প্রায়রের উদ্দেশে, সাড়ে তিন দশক আগে গাওস্করদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল বলেও শোনা যায় না। বিবিসি-র টেস্ট ম্যাচ স্পেশ্যালে রবিবার জিওফ বয়কট বলেছেন, “এই ছেলেটার (জনসন) মতো মুখ অস্ট্রেলিয়ার আর কারও ছিল বলে তো শুনিনি। কথায় কথায় পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করে!” চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময়ও জনসনের মুখ খিঁচুনি চলছিল ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের প্রতি।
আবার সকালে নেটে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানরা বহুক্ষণ ব্যাট করার পর খেলা শুরুর মাত্র ১৫ মিনিট আগে মাইকেল ক্লার্ক ইংল্যান্ডকে ৫৩১ রানের টার্গেট দিয়ে নিজেদের আগের দিনের স্কোরেই (১৩২-৩) দ্বিতীয় ইনিংস ছাড়ার তুখোড় ‘মাইন্ডগেম’ সামলাতে পারলেন না ক্যাপ্টেন কুক। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই জনসনের শর্ট বল হুক করতে গিয়ে লং লেগে ক্যাচ দিয়ে যে ভাবে ফেরেন কুক, সেটাকে ব্রিটিশ মিডিয়া লিখছে, “কুকের হুকটা উসেইন বোল্টের আস্তে দৌড়নো বা ভেটেলের কাঁপতে কাঁপতে গাড়ি চালানোর মতো।”
এবং দিনের শেষে ইংল্যান্ড যখন আড়াইশোও (২৪৭-৬) ছুঁতে পারেনি, তখনই স্টুয়ার্ট ব্রডের মাথা গরম করানো শুরু করে দেন ‘মিচ’। এক সময় মেজাজ হারিয়ে নিজের হেলমেটে ঘুসি মেরে জনসনের দিকে ইঙ্গিত করতে দেখা গেল ব্রডকে। শেষ ওভারে প্রায়রকে জনসন গালিগালাজ করায় ব্রড এগিয়ে আসেন সতীর্থকে আড়াল করতে। আম্পায়ার ধর্মসেনা পরিস্থিতি সামলালেও কিন্তু অশান্তির আগুন যেন সারা সিরিজেই জারি থাকার ইঙ্গিত রেখে গেল।
গোটা দিনে রুট (৮৭) আর পিটারসেনের (৫৩) ১১১ রানের পার্টনারশিপই যা আশার আলো দেখিয়েছিল ইংরেজদের। সিরিজে তাদের প্রথম তিন অঙ্কের জুটি এটা। কিন্তু লিয়ঁ (১-৭৮) আর সিডল (২-২১) দু’জনকেই সরিয়ে দিতেই ফের বাঁচার লড়াই শুরু হয়েছে ইংল্যান্ডের। এখনও ২৮৪ রান দূরে তারা। আর ২-০ করতে ক্লার্কের দরকার চার শিকার। |