এই না হলে ক্যাপ্টেন কুল! ওয়ান ডে-র এক নম্বর টিমের টানা দু’নম্বর হার। তবু ‘মেন ইন ব্লু’-র ক্যাপ্টেনের শরীরীভাষায় যেন চিন্তার লেশমাত্র নেই। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ খুইয়ে উল্টে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বলে গেলেন, “আমরা লক্ষ্যটা যতটা সম্ভব সহজ-সরল রাখতে চাই। ক’টা ম্যাচ জিতলাম বা হারলাম সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। এই ম্যাচের পর আমরা যখন মাঠে নামব তখন কী ভাবে হারের ধাক্কা কাটিয়ে পাল্টা লড়াই করব সেটা নিয়েই ভাবছি।”
অধিনায়কের কথায় টিম ইন্ডিয়া-র আত্মবিশ্বাস বজায় থাকার ইঙ্গিত থাকলেও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায় ডারবানে হারতে হল কেন? ধোনির ইঙ্গিত ব্যাটিং ব্যর্থতার দিকেই। ভারত অধিনায়ক বলে দেন, “আমার মনে হয় এ দিন, আমাদের ব্যাটিংয়ে ভুলত্রুটি হয়েছে। শট নির্বাচন ঠিক হয়নি। শুরুতেই বেশ কয়েকটা উইকেট চলে যাওয়ায় আমাদের কাজটা আরও কঠিন হয়ে উঠেছিল।” তবে টিমের বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি ধোনি। “বোলারদের জন্য পিচ থেকে খুব একটা সাহায্য ছিল না। সিম বা সুইং কোনওটাই নয়। তবু বোলাররাই আমাদের একটা সময় ম্যাচে ফিরিয়েছে। বিশেষ করে স্পিনাররা। আগের ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখেছে বোলাররা। আমাদের সামনে রানের টার্গেটও ঠিক ছিল। এ রকম দারুণ একটা ওয়ান ডে উইকেটে ২৮০ নিয়ে অসন্তুষ্টির কিছু থাকতে পারে না। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্যই আমাদের যা পরিকল্পনা ছিল সেটা কাজে লাগাতে পারিনি।”
দক্ষিণ আফ্রিকান পেস ব্যাটারির চাপেই আবার ধরাশায়ী হতে হল। ধসে গেল ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ। কোন জাদুতে ডেল স্টেইনরা বারবার ভেল্কি দেখিয়ে চলেছেন? ভারত অধিনায়ক বলে দেন, ‘‘আমার মনে হয় ওদের ফাস্ট বোলিং আক্রমণের সাফল্য একই জায়গায় বলটা রেখে যাওয়ার ধারাবাহিকতা। নিখুঁত লেংথ-লাইন বোলিং। সেটাই ওদের আলাদা করে দিয়েছে।”
একদিনের সিরিজ পকেটে পুরে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এবি ডে’ভিলিয়ার্স বলেছেন, “আমরা ধারাবাহিকতার খোঁজে ছিলাম। এক নম্বর ওয়ান ডে টিমের বিরুদ্ধে সেটা দেখাতে পারায় আলাদা তৃপ্তি হচ্ছে। প্রয়াত মাদিবা-র জন্য দিনটা খুবই আবেগের। এমন একটা দিনে জিতে তাই আরও তৃপ্তি পাচ্ছি। ২৩০-২৪০ রানই এই পিচে ভাল স্কোর। তাই ২৮০ ওঠাটা দারুণ ছিল।” |
সিরিজে উপর্যুপরি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে এ দিনের ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ কুইন্টন ডি’কক বলেছেন, “ধোনির ক্যাচটা নিয়ে খুশি হইনি। কারণ ওই সময়টা ভারতের উইকেটের চেয়েও আমাদের কুড়ি ওভারের মার্কটায় পৌঁছনো বেশি দরকার ছিল। নইলে বৃষ্টি নেমে খেলা ভেস্তে গেলে ‘নো রেজাল্ট’ হয়ে যেত ম্যাচটা। তাই আমি তখন ভেবেছিলাম, আমাদের উইকেট চাই না। তবে ম্যাচে নিজের পারফরম্যান্স দেখে তৃপ্ত লাগছে। প্লেয়ারের খারাপ সময় মানুষ তাকে ঘৃণা করে। তাই এ রকম একটা ভাল মুহূর্ত এখন উপভোগ করতে চাই।’’
এ দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রণমূলক একাদশের বিরুদ্ধে ভারতের এই সফরের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ এক দিন এগিয়ে এসেছে। প্রস্তুতি ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু নেলসন ম্যান্ডেলার শেষকৃত্য ১৫ ডিসেম্বর থাকায় এক দিন এগিয়ে ম্যাচটি এখন ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর হবে। |
• জানুয়ারিতে পাকিস্তানের কাছে ১-২ হারের পর চলতি বছরে ভারতের প্রথম ওয়ান ডে সিরিজ হার। এর মধ্যে ভারত টানা ছ’টা ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছে।
• ২০১৩-এ এর আগে টানা দু’ম্যাচে ভারত হেরেছে জুন-জুলাইয়ে কিংস্টনে। প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১ উইকেটে। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ১৬১ রানে।
• ক্যাপ্টেন ধোনির বিদেশে ওয়ান ডে রেকর্ড- ম্যাচ ৯৩, জয় ৫২, হার ৩৩, টাই ২, নো রেজাল্ট ৬। |
|
দক্ষিণ আফ্রিকা |
ডি’কক ক রোহিত বো অশ্বিন ১০৬
আমলা ক ধোনি বো শামি ১০০
ডে’ভিলিয়ার্স স্টাম্পড ধোনি বো জাডেজা ৩
দুমিনি রান আউট ২৬
মিলার এলবিডব্লিউ শামি ০
কালিস বো শামি ১০
ম্যাকলারেন ন.আ. ১২
ফিলান্ডার ন.আ. ১৪
অতিরিক্ত ৯
মোট (৪৯ ওভারে) ২৮০-৬
পতন: ১৯৪, ১৯৯, ২৩৩, ২৩৪, ২৪৯, ২৫৫
বোলিং: উমেশ ৬-০-৪৫-০, শামি ৮-০-৪৮-৩, ইশান্ত ৭-০-৩৮-০
অশ্বিন ৯-০-৪৮-১, রায়না ৬-০-৩২-০, কোহলি ৩-০-১৭-০, জাডেজা ১০-০-৪৯-১
|
ভারত |
রোহিত ক আমলা বো সোতসোবে ১৯
ধবন ক দুমিনি বো স্টেইন ০
কোহলি ক দে’কক বো সোতসোবে ০
রাহানে ক দে’কক বো মর্কেল ৮
রায়না ক মিলার বো মর্কেল ৩৬
ধোনি ক দে’কক বো ফিলান্ডার ১৯
জাডেজা ক ডে’ভিলিয়ার্স বো সোতসোবে ২৬
অশ্বিন ক দে’কক বো স্টেইন ১৫
শামি বো সোতসোবে ৮
উমেশ বো স্টেইন ১
ইশান্ত ন.আ. ০
অতিরিক্ত ১৪, মোট (৩৫.১ ওভারে) ১৪৬
পতন: ১০, ১৬, ২৯, ৩৪, ৭৪, ৯৫, ১৩৩, ১৪৫, ১৪৬
বোলিং: স্টেইন ৭-১-১৭-৩, সোতসোবে ৭.১-০-২৫-৪, মর্কেল ৬-০-৩৪-২
ফিলান্ডার ৬-১-২০-১, দুমিনি ৫-০-২০-০, ম্যাকলারেন ৪-০-২৫-০ |
|
|