মেজাজ হারানোর সব রকম কারণই ছিল মাঠে ও ড্রেসিংরুমে। সে সব সামলে বাংলার জন্য লড়ছেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। বাংলার জন্য লক্ষ্মীর এই লড়াইটা অবশ্য নতুন নয়। কিন্তু বাংলা শিবিরের অশান্ত হয়ে ওঠার কারণটা বেনজির।
১৯৮-এর মধ্যে সাত ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পর রুখে দাঁড়ান লক্ষ্মী (৮৭ ব্যাটিং)। সঙ্গে ইরেশ সাক্সেনা (৫)। দু’জনে মিলে ৫৪ যোগ করলেও লক্ষ্মীর লড়াই চাপা পড়ে যাচ্ছে দিনের বিতর্কিত ঘটনায়।
বাংলার ইনিংসের ৮০ নম্বর ওভার। ক্রিজে গীতিময় ও সন্দীপন। বোলার প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার ও রেলওয়েজ ক্যাপ্টেন মুরলী কার্তিক। নন স্ট্রাইকিং এন্ডে সন্দীপন ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম বার সতর্ক করে দেন মুরলী। ফের একই ঘটনা। এ বার স্টাম্পে বল ছুঁইয়ে সন্দীপনকে আউট করে দেন মুরলী। কাউন্টি ক্রিকেটেও সারের হয়ে খেলতে নেমে সমারসেটের অ্যালেক্স বারোকে এ ভাবেই আউট করেন মুরলী। শোনা যায়, ওই ঘটনার পরই তাঁর কাউন্টি চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। টিভি আম্পায়ার সন্দীপনকে রান আউট দেওয়ার পরই ফুঁসতে শুরু করে বাংলার ড্রেসিংরুম। কোচ অশোক মলহোত্র ও পেসার অশোক দিন্দা চেঁচিয়ে বলতে থাকেন, এটা “অখেলোয়াড়োচিত”।
লাঞ্চে যখন রেলের ক্রিকেটাররা মাঠ ছেড়ে বেরোচ্ছেন, তখন হাততালি দিতে শুরু করেন বাংলার ক্রিকেটাররা। এক সিনিয়র চেঁচিয়ে মুরলীকে ‘চিট’ বলেন। মলহোত্রর উদ্দেশে মুরলীও পাল্টা মন্তব্য করেন। বাংলার কোচ চেঁচিয়ে ওঠেন, “তুমি নাকি ভারতীয় ক্রিকেটার! এ রকম ক্রিকেট খেলো তুমি? জুনিয়রদের জন্য কী দৃষ্টান্ত স্থাপন করছ?” মুরলী তাঁকে চুপ করতে বলে ড্রেসিংরুমে ঢুকে যান। লাঞ্চের পর মাঠে নামার আগে ফের গোলমাল। বাংলার এক সিনিয়র মুরলীর উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করায় ম্যাচ রেফারি কল্যাণ সুন্দরম বেরিয়ে এসে তাঁকে চুপ করতে বলেন। পরে অশোক সাংবাদিকদের সামনে ফের উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। বলেন, “এক দিকে কোর্টনি ওয়ালশকে দেখেছি। আর আজ আমরা এখানে দেখলাম স্যর মুরলী কার্তিককে।” খেলার পর ম্যাচ রেফারি বাংলার কোচকে সতর্ক করে দেন। শোনা যাচ্ছে তাঁর শাস্তি হলেও হতে পারে। কারও কারও আশঙ্কা মলহোত্রকে না পরের ম্যাচে সাসপেন্ড হতে হয়। লাঞ্চের সময় গণ্ডগোল নিয়ে মলহোত্র বলেন, “আমরা শুধু হাততালি দিচ্ছিলাম। শুরু ওরা করেছে। তার জবাব দিয়েছি। বসে থাকার লোক নই আমি।”
আগের দিন স্লো ব্যাটিংয়ের জেরে রানটা ওঠেইনি। তার উপর এ দিন পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলা। সন্দীপন ফেরার পর লক্ষ্মী ও সৌরাশিস (২৫) কিছুটা সময় লড়েন। বাংলাকে ১৯৮-এ পৌঁছে দিয়ে ফিরে যান সৌরাশিস। মলহোত্র বলছিলেন, “সোমবার প্রথম ঘণ্টাটা লক্ষ্মী পার করিয়ে দিতে পারলেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করব।” |
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রেল-৩০৬
বাংলা ২৫২-৭ (লক্ষ্মী ৮৭ ব্যাটিং, গীতিময় ৫৬, অনুরিত সিংহ ৪-৮৭) |