ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে শুরু হল রেললাইন বসানোর কাজ। সোমবার প্রকল্পের বিধাননগর অংশে এই কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বিধাননগর-শিয়ালদহ অংশে এবং পরের দফায় বাকি অংশের কাজ শেষ করা হবে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি।
কিন্তু সময়ে কাজ শেষ করার পথে সমস্যা রয়েছে দত্তাবাদ নিয়ে। সরকারের অবশ্য দাবি, দত্তাবাদে পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমীক্ষা শেষ করে মেট্রোর হাতে তালিকা তুলে দিয়েছেন তাঁরা। পুনবাসনের জমিও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের সহযোগিতার কথা স্বীকার করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, দত্তাবাদের সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলেই তাঁদের অনুমান।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে শিয়ালদহ থেকে বিধাননগরের পাঁচ নম্বর সেক্টরের মধ্যে কংক্রিটের উপরে মোট ৯.৬ কিলোমিটার লাইন বসবে। রেললাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছিল দিন কয়েক আগেই। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ঢালাইয়ের কাজ। এ দিন বিধাননগরের বিদ্যাধরী বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সিটি সেন্টার পর্যন্ত প্রায় ২০ মিটার অংশে কাজ হয়। সকালেই পরিদর্শনে যান উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়াররা। রেললাইনের উপর পুজো করে শুরু হয় কাজ। |
কাজ শুরুর আগে পুজো। সোমবার। ছবি: শৌভিক দে। |
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত সুভাষ সরোবর থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টরের মধ্যে ৫.৬ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসেছে। পরে সুভাষ সরোবর থেকে ভূগর্ভে শিয়ালদহ অংশে কাজ হবে। প্রতি দিন গড়ে ২০-৩০ মিটার করে রেললাইন বসাতে ঢালাইয়ের কাজ হবে বলে স্থির করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে শিয়ালদহ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত কাজ হবে।
সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ১ নভেম্বর এই কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানান, ২১৬ সপ্তাহের মধ্যে মেট্রোর কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ২০১৭ সালের মধ্যেই পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে হাওড়া ময়দানের মধ্যে মেট্রো চলাচল শুরু করতে চাইছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু তার মাঝে বর্তমানে পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে দত্তাবাদের আগে পর্যন্ত উড়ালপুল তৈরি হয়ে গিয়েছে, অন্যদিকে সুভাষ সরোবর থেকে শিয়ালদহের মধ্যে ভূগর্ভের কাজও হয়েছে। কিন্তু মাঝে দত্তাবাদ অংশে জটিলতা তৈরি হয়ে রয়েছে। যার জেরে সে অংশে কোনও কাজই শুরু করা যায়নি।
দত্তাবাদে পুনর্বাসন সংক্রান্ত গোলমাল এমন পর্যায়ে যায় যে, তা নিয়ে শাসক দলের দুই বিধায়ক ও কর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে গোলমাল হয়। স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য দাবি, ওই গোলমালের পরে হাতে গোনা কয়েক দিন সমীক্ষার কাজ করে পরে বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে আর কিছুই হয়নি। যদিও মেট্রোর এক কর্তার দাবি, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে। কাজও এগোচ্ছে। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দত্তাবাদের সমস্যা মিটিয়ে কাজ শেষ করা যাবে বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সাফ দাবি, “আমাদের তরফের কাজ আমরা করে ফেলেছি। দত্তাবাদে সমীক্ষা শেষ। পুনর্বাসনের তালিকা মেট্রোকে দিয়েছি। প্রথমে অস্থায়ী ভাবে পুনর্বাসন দিয়ে মেট্রোর কাজ শেষ করা হবে, পরে স্থায়ী ভাবে ফ্ল্যাট তৈরি হবে। সে জমিও মেট্রোকে দেওয়া হয়েছে। এখন কাজ শেষ করার বিষয়টি মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপর।”
|