রাঁচির জেল-বাগানে লালু মালির কিসসা |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
যিনি রাজনীতি করেন, তিনি গরুও দুইতেন। এ বার তিনি বাগান করবেন।
লালুপ্রসাদ যাদব। বিহারের ডাকসাইটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাংসদ হিসেবেও সদ্য প্রাক্তন হয়েছেন। অর্থাৎ সাংসদ পদ খুইয়েছেন। মাসখানেক জেল খাটা হয়ে গিয়েছে। এ বার সশ্রম দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে জেলে কাজকর্ম করাও শুরু করতে হবে। লালুর জন্য মালির কাজ বরাদ্দ হয়েছে বলে রাঁচির বিরসা মুণ্ডা জেল সূত্রের খবর।
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির চাইবাসা ট্রেজারি মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন লালু-সহ মোট ৪৫ জন। এঁদের মধ্যে জগন্নাথ মিশ্র ছাড়া সকলেই রাঁচির জেলে বন্দি। স্বাস্থ্যের কারণে জামিন পাওয়া বিহারের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ রয়েছেন রাঁচিরই এক বেসরকারি হাসপাতালে। |
|
অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
বিরসা মুণ্ডা জেলে এত দিন কার্যকরী সুপারের দায়িত্বে ছিলেন রাঁচির অতিরিক্ত কালেক্টর বীরেন্দ্র কুমার। দু’দিন আগে তিনি সুপারের দায়িত্ব ছেড়েছেন। বীরেন্দ্রই জানিয়েছেন, তিনি পদে থাকাকালীনই লালু-সহ বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের সকলের জন্যই বাগানে মালির কাজ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে বেক জুলিয়াস, ফুলচাঁদ মিশ্র, কে অরমুগম ও মহেশ প্রসাদ বন্দি এই চার প্রাক্তন আমলা শিক্ষকতা করবেন বলে ঠিক হয়েছে।
তবে প্রাক্তন কার্যকরী সুপার জানাচ্ছেন, লালু চাইলে দু-তিন মাস পরে অন্য কাজও করতে পারবেন। জেলের নিয়ম মেনেই তিনি প্রতি মাসে পারিশ্রমিক পাবেন।
কিন্তু লালুরা তো গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে জেলে রয়েছেন। কাজ দিতে এত দেরি হল কেন? বীরেন্দ্র জানান, জেল কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।
জামিনের জন্য লালুপ্রসাদরা উচ্চ আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর সেই আর্জি খারিজ করেছে উচ্চ আদালত। তার পরেই জেল কর্তৃপক্ষ লালু এবং অন্যদের জন্য কাজ নির্ধারণ করেছেন।
গত এক মাস যাবৎ জেলে নিয়মিত গীতাপাঠ করছিলেন লালু। গাঁধীর জন্মদিনে লালুর অনুরোধে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর ভিআইপি ওয়ার্ডে বাপুর ছবি পৌঁছে দিয়েছিলেন।
জনা কয়েক নিরাপত্তা কর্মীর সামনে লালু জেলের মধ্যেই বাপুর ছবিতে মালাও দেন। জামিন নাকচ হওয়ায় দীপাবলিও জেলেই কাটল। জেলে গিয়ে রবিবার তাঁকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানান দলের নেতারা।
এ বার শুরু হতে চলেছে নতুন রুটিন। মাথায় গামছা। হাতে মাটি কোপানোর খুরপি নয়তো কোদাল। কারাগারের উদ্যানে ফুল ফোটাতে নেমে পড়বেন আরজেডি সুপ্রিমো।
আজ ছিল ডাল খালি। কাল ফুলে ভরে যায় কি না, সেটা লালুর হাতযশ!
|
পুরনো খবর: এ কী হল! রায় শুনেই ম্লান মুখ |
|