শারীরিক নির্যাতনের পরে এক মহিলাকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন গঙ্গারামপুরের সকলেই। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলায় চার্জশিট দিয়ে দোষীদের শাস্তির আর্জি করা হয়েছে। শুক্রবার গঙ্গারামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সত্যেন রায় বলেন, “পুজো মন্ডপে মহিলার দেহ মিলেছে শুনেছি। চরম অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে বাসিন্দাদের সন্দেহ। অসহায় মহিলাকে খুনে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র আগেই ঘটনার নিন্দা করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। ইতিমধ্যেই পুলিশ ওই মন্ডপের ঢাকি এবং নৈশপ্রহরীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। ঠিক কী ঘটেছিল সেই ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। মহাষ্টমীর রাতে কালদিঘি এলাকায় একটি ক্লাবের দুর্গাপুজোর মন্ডপে ঘটনাটি ঘটে। পরদিন সকালে এলাকার এক স্টুডিওর আলোকচিত্রী মৃত মহিলার দেহের একাধিক ছবি তুলে রাখেন বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পুলিশ ছবিগুলি সংগ্রহ করেছে বলে এলাকার বাসিন্দারাই জানিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যে দুজনকে ধরা হয়েছে তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে তত্য-প্রমাণ মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে ওই ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। ধৃতদের সাজা হবেই।”
কালদিঘি ওই পুজো মন্ডপ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মৃতা মহিলার বাড়ি। রাস্তার পাশে গলির ধারে মাটির ছোট্ট একটি ঘর। উপরে টিনের চাল। এক চিলতে বারান্দা। সেখানে চৌকি পাতা। যেখানে থাকতেন ওই মহিলা। তার মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা থাকেন কুমারগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়িতে। নিহত মহিলার কয়েকজন পড়শি জানান, দোষীদের সাজা না হওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীরা শান্তি পাবেন না। হত তরুণীর জেঠার বাড়ি সেখানেই। পেশায় শিক্ষক সেই জেঠা জানান, ভাইঝি নিজে রান্না করে একা খেত। হরিরামপুরে শ্বশুর বাড়িতে একাই যাতায়াত করতে। বছর পাঁচেক আগে আগুন পোহাতে গিয়ে পিঠ পুড়ে যায়। তার পর থেকে কিছুটা মানসিকভাবে সামান্য ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় নিঃসন্তান ভাইঝি ওই বাড়িতে একাই নিজের মতো থাকত বলে তাঁর জেঠার দাবি।
এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা এই দিন জানান, অষ্টমীর রাতে ওই ক্লাবের পুজো মণ্ডপে রাতে আরতিতে অংশ নিয়েছিলেন ওই মহিলা। বেশি রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে ক্লাবের অন্য সদস্যরা তাঁকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এ দিন কালদিঘির ওই ক্লাবের একাধিক সদস্য ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। ক্লাবের কর্তা তরণী বর্মন সহ কয়েক জন জানিয়েছেন, তাঁরাও বিশদে খোঁজখবর নিয়ে যতটা সম্ভব পুলিশকে সাহায্য করছেন। |