বেঁচে থাকতে ছেলে বিক্রির আর্জি চাঁচলে
বিপিএল তালিকায় নাম থাকলেও মেলেনা প্রয়োজনীয় সাহায্য। তিন বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানের খাবারও জোটাতে পারেন না ক্যান্সার আক্রান্ত তাহেরুন বেওয়া। নিজের সন্তান বিক্রি করতে চান বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুবড়ি গ্রামের বছর চল্লিশের ওই মহিলা। তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েতে আবেদন নিবেদন করেও সাহায্য মেলেনি। যা পরিস্থিতি তাতে তো না খেয়ে মরতে হবে। তাই ঠিক করেছি, শ্রমিক সরবরাহকারী কাউকে এক সন্তানকে বিক্রি করে দেব। প্রধানের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।” পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। অধিকাংশই দিনমজুর পরিবার। তবুও গ্রামবাসীরা নিজেরাই চাঁদা তুলে তাহেরুনকে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু দিনের পর দিন তাঁদের পক্ষে সাহায্য করা যে সম্ভব নয় তা গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। মালদহ-রতুয়া রাজ্য সড়কের ধারে দুবড়ি গ্রামে খাস জমিতে বসবাস তাহেরুন বেওয়ার। পলিথিন মোড়া ভাঙাচোরা একটিই ঘর। পুজোর আগে পঞ্চায়েতের তরফে পরিবারটিকে ২৪ কিলোগ্রাম চাল দেওয়া হয়েছিল। তা দিয়েই কয়েকদিন একবেলা একমুঠো ভাত পেটে পড়েছিল পরিবারটির। তারপর আর উনুনে হাঁড়ি চড়েনি।
ক্যান্সারে আক্রান্ত মা
গ্রামবাসীরা জানান, সকাল হলেই ইতিউতি একমুঠো খাবারের আশায় ঘুরে বেড়ায় তিন ভাই। এগারো বছরের ডালু, দশ বছরের লেবু আর আট বছরের ইমরান। কোনও দিন একমুঠো খাবার জোটে, কোনওদিন জোটে না। রাতে বাড়িতে ফিরে জল খেয়েই ঘুমিয়ে পড়তে হয় তিন ভাইকে। কিন্তু দিনের পর দিন এ ভাবে কাটলেও পঞ্চায়েত-প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান সফিকুল আলম বলেন, “পরিবারটির দুর্দশা চোখে দেখা যায় না। ওই মহিলা সন্তান বিক্রির আবেদন করেছেন। কিন্তু তা তো হবে না। আর পঞ্চায়েতের সাধ্য কতটুকু। তবু আমরা পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।” স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, মহিলার স্বামী নাসিরুদ্দিনও চিকিৎসার অভাবে মারা গিয়েছেন। গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে যথাসাধ্য সাহায্য করেছিলাম। তবে তা টানা করা তো সম্ভব নয়। ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও পার্থ দে বলেন, পরিবারটিকে চাল, ত্রিপল দেওয়া হয়েছিল। দেখছি আরও কী ভাবে সাহায্য করা যায়। মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার বলেছেন, “পরিবারটির দুর্দশার কথা কেউ আমাকে জানায়নি। আমি খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসনের তরফে সবরকম সাহায্য করা হবে।” তিনি জানান, অভাবী মানুষদের সাহায্যের জন্য রাজ্যপালের একটি তহবিল রয়েছে। সেই তহবিল থেকে ওই মহিলা যাতে সাহায্য পান তা দেখা হবে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.