|
|
|
|
মালদহ মেডিক্যাল কলেজে |
তিন দিনে ১৭ শিশুর মৃত্যু , কেন্দ্র-রাজ্য কাজিয়া শুরু
নিজস্ব সংবাদদাতা • চাঁচল |
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরপর শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গত তিনদিনে হাসপাতালে ১৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এরমধ্যে শিশু মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই মন্ত্রীর মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন প্রসূতি ভর্তি হন। ২৪ ঘন্টায় গড়ে ৪ সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই ধরা হয়। কিন্তু বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত অবধি ২৪ ঘন্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৭ শিশুর।
ঘটনায় উদ্বিগ্ন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী এদিন দুপুরে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সেখানে ঘটনার জন্য তিনি রাজ্য সরকারকে দায়ী করেন। পাশাপাশি, জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের টাকা খরচ করতে রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলেও তিনি অভিযোগ করেন। যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কোনও ভূমিকাই নেই বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিধায়ক পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। |
|
শিশুমৃত্যুর পরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য
প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “চিকিৎসকরা বলছেন, অধিকাংশ শিশুই জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রেফার হয়ে আসছে। এমন অবস্থায় তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে যখন আর করার কিছু থাকছে না। কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করছে। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার ব্যর্থ। অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। তাই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। রাজ্য সরকার এরজন্য দায়ী।” বিষয়টি শোনার পর রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেনস, “শিশু মৃত্যুর খবর পেলেই উনি হাসপাতালে যান। মায়াকান্না কাঁদেন। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসাপাতালের উন্নয়নে উনি কিছুই করেননি। একটা সূচও দেননি। বরং আমাদের সরকার, মুখ্যমন্ত্রী পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। আর জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দে কাজ না হলে, উনি তো তা করতে পারেন। উনি কাজ করে দেখান।” হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৫ অক্টোবর ৪টি, ১৬ অক্টোবর ৫টি ও ১৭ অক্টোবর ৭টি ও ১৮ অক্টোবর একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যে ৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে, গাজলের অনিতা হীরা নামে এক প্রসূতির ৫ দিনের শিশুপুত্র। ইংরেজবাজারের কঞ্চনটারের সুমা বিবি, কদুবাড়ির মনেহার বিবি, কালিয়াচকের চঞ্চলা মন্ডল, সিঙ্গাবাদের পুতুল রায়, হরিশ্চন্দ্রপুরের সোনাপুরের মুমতাজ বিবির এক দিনের শিশুপুত্র ও গাজলের মল্লিকা সোরেনের ১৪ দিনের শিশুপুত্র। এরা প্রত্যেকেই সিক নিউবর্ন কেয়ার ইফনিট ও নিওনেটাল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। এদের মধ্যে কম ওজনের পাশাপাশি বার্থ এসফিক্সিয়া ও সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল এমএ রশিদ বলেন, “বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্য স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে। আমরা সমস্ত কিছু জানিয়ে দিয়েছি। সেথানে থেকেই যা বলার বলা হবে।” |
|
|
|
|
|