|
|
|
|
করিমগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর চিকিৎসা করেন চৌকিদার
উত্তম সাহা • শিলচর |
সরকারি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীদের ওষুধ দেন চৌকিদার। প্রসবে সাহায্য করেন অস্থায়ী সাফাইকর্মী!
করিমগঞ্জের ভেটারবন্দ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিস্থিতি এমনই।
রোগীর চিকিৎসা কী ভাবে হবে, কোন ওষুধ চাই— এ সব ঠিক করেন চৌকিদার বিপুল বর্মন। অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খাতায়-কলমে চিকিৎসক, নার্স থাকলেও, বাস্তবে মাসে মাত্র দিনদু’য়েক তাঁদের দেখা মেলে। অন্য সময় সব কিছু সামলান বিপুলবাবুই।
রামকৃষ্ণনগর সাব-ডিভিশনাল মেডিক্যাল অফিসার দয়াশংকর শর্মা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির একমাত্র চিকিৎসক নিয়মিত সেখানে যান না। তাঁর তিন মাসের বেতন আটকে রয়েছে। ভেটারবন্দে অন্য চিকিৎসক পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে আর্জি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চৌকিদার বিপুলবাবুকে ‘সাহায্য’ করতে এক মহিলাকে নিয়োগ করেছে পরিচালন কমিটি। রবিসেনা সিংহ নামে ওই মহিলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘উপার্জন’ থেকেই বেতন পান। মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করেন তিনিই। কমিটি জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সাফাইয়ের জন্য ওই মহিলাকে নিয়োগ করা হয়েছে। সেটি সরকারি পদ নয়।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১৯৬০ সালে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে বহির্বিভাগ, প্রসূতিঘর, চিকিৎসকের আবাসন রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবারই অভাব। দিনপনেরো পরপর চিকিৎসক সেখানে যান। তবে রোগী দেখার সময় পান না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাগজপত্র দেখতেই ব্যস্ত থাকেন। তা-ই রোগীদের চিকিৎসা করতে হয় চৌকিদার, সাফাইকর্মীকেই।
রোগীদের চিকিৎসা কেন করতে হচ্ছে বিপুল, রবিসেনাকে? স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে জবাব মেলেনি। দয়াশঙ্করবাবু জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
চিকিৎসা করতে শিখলেন কী ভাবে? বিপুলবাবু বলেন, “অনেক দিন ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাহারা দিচ্ছি। ডাক্তারদের সঙ্গে থেকে কোন রোগে কোন ওষুধ দিতে হয় জেনেছি। জরুরি প্রয়োজনে গ্রামবাসীদের ওষুধ দিতে অসুবিধা হয় না।”
রবিসেনার বক্তব্যও এক। তাঁর কথায়, “নার্স থাকলেও সন্তান প্রসবের কাজটা আমাকেই করতে হয়। প্রসব-যন্ত্রণা নিয়ে কেউ এলে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কি?”
এর সদুত্তর দিতে পারেননি প্রশাসনিক কর্তারাও। |
|
|
|
|
|