গ্রামে ঢোকার মুখেই লাগানো হয়েছে চন্দননগরের আলোয় সাজানো তোরণ। লক্ষ্মীর মণ্ডপটিও প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতায় মাদুর দিয়ে তৈরি। মণ্ডপ যেখানে হয়েছে সেখানে চণ্ডালিনী রূপে লক্ষ্মীর সেবাদানের চিত্রও রয়েছে। এমনই নানা থিমের পুজোয় মেতে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সদিয়াল গ্রাম। |
সদিয়াল গ্রামে কোনও দুর্গাপুজো হয় না। লক্ষ্মীপুজোই এই গ্রামের মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় পুজো। দুর্গা পুজো নয়, লক্ষ্মীপুজোতেই গ্রামের কচি কাচা থেকে বড়দের গায়ে নতুন জামা ওঠে। গ্রামে প্রায় দেড় হাজার মানুষ রয়েছেন। বেশিরভাগই মৎস্যজীবী। প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ করে এ বার গ্রামে দু’টি পুজোর আয়োজন করেছেন তাঁরা। সদিয়াল গ্রামে ঢোকার মুখে পুজোটি পরিচালনা করেন জনকল্যাণ সমিতির সদস্যেরা। সাত বছর ধরে চলছে এই পুজো। পুজোর দিনে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। রাস্তার দু’পাশের আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রামায়ণ-মহাভারতের নানা দৃশ্য। পুজো কমিটির পক্ষে বাপি হালদার বললেন, “সারা বছর ধরে এই পুজোর জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি। তাই পুজো এলে সকলেই সাধ্যমতো সাহায্য করি। বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়স্বজের ভিড় লেগে যায়। দুর্গা নয়, এটাই আমাদের কাছে বড় পুজো।”
ওই পুজো মণ্ডপ থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে রয়েছে সদিয়াল পূর্বপল্লির পুজো মণ্ডপ। রাজবাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। রয়েছে উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের দৃশ্য। রয়েছে মনভরানো আলোও। পুজো কমিটির তরফে স্বপন হালদার, জয়ন্ত বিশ্বাসেরা জানালেন, “পুজোর এক বছর আগে থেকেই থিম নিয়ে নানা পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায় আমাদের। যে যেখানেই থাকুক না কেন, পুজোর সময়ে গ্রামে সবাই হাজির হবেই।” |
গ্রামের কলেজপড়ুয়া পঞ্চানন পাইক, দেবনাথ পাইকেরা জানান, “ব্লকে আমাদের গ্রামটি বেশ পিছিয়ে পড়া। পুজোর জন্য দিনমজুরি করে অর্থ জোগাড় করি আমরা।”
শুধু সদিয়াল নয়, আশপাশের খড়বাটি, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, শোভানগর, অন্ধমুনি, কাটান দিঘি, নালুয়া, কাশিনগর-সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ জড়ো হন এই দু’টি পুজোতে। কোজাগরীর রাতে মেতে ওঠেন আনন্দে।
|