ভোঁতা হাঁসুয়া নিয়ে এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করায় বহরমপুর থানার সুন্ধিপুর গ্রামে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন গ্রামবাসী। তার আগে তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সাহাবুদ্দিন শেখ নামে ওই যুবকের ভোঁতা হাঁসুয়ার কোপে গুরুতর জখম হন মাসুদাল শেখ নামের প্রতিবেশী এক যুবক। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত সাহাবুদ্দিনকে গ্রামবাসীর পাকড়াও করে দড়ি দিয়ে নিমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। দুপুরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। এই নিয়ে বছরখানেকের মধ্যে সাহাবুদ্দিনের হাঁসুয়ার কোপে গুরুতর জখম হয়ে দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে ওই গ্রামের মোট ৬ জনকে।
|
জখম সাহাবুদ্দিন। —নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় নওদাপানুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সাহাবুদ্দিন মণ্ডলের বাড়ি সুন্ধিপুর গ্রামে। তিনি বলেন, “মানসিক ভারসাম্যহীন সাহাবুদ্দিন শেখের দৌরাত্মে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ ও আতঙ্কিত। বছর দেড়েকের মধ্যে গ্রামের ৬ জনকে সে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়েছে। আমরা চাই পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে মানসিক হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করুক। তাতে তার চিকিৎসা হবে। গ্রামের মানুষও স্বস্তি পাবেন।” সাহাবুদ্দিন শেখের বাবা ফুলচাঁদ শেখ ও মা সামসুনা বিবি ভিক্ষা করে কোনও মতে সংসার চালান। তাঁরা দু’ জনেই বলেন, “বছর চারেক থেকে ছেলের মাথা খারাপ হয়েছে। আমাদেরও মারধর করে বাড়ি থেকে হামেশাই তাড়িয়ে দেয়। ভিক্ষা করা টাকায় ৩ বছর ধরে ৩ জন হাতুড়ের কাছে চিকিৎসা করিয়ে কোনও লাভ হয়নি।” তাঁরা বলেন, “আমাদের আর ক্ষমতা নেই। তাই চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাকে জেলে পুরুক, অথবা হাসপাতালে পাঠাক তাতে আমাদের বলার কিছু নেই। বরং তাতে সবারই ভাল হবে।” বহরমপুর থানার আইসি মেহায়মেনুল হক জানান, ধৃত সাহাবুদ্দিনকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হবে কি না, তা ঠিক করবে আদালত। শুক্রবার সকালে গ্রামের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন মাসুদাল শেখ। তখন ওই এলাকায় অনেক মানুষজন ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ সাহাবুদ্দিন শেখ একটা মরচে পড়া ভোঁতা হাঁসুয়া দিয়ে মাসুদালের মাথায়, ঘাড়ে ও গালে কোপ মারে। |