কোথাও সম্প্রীতি, কোথাও ফুটবল, কোথাও আবার নিখাদ থিম কিংবা আলোর রোশনাই। লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে সীমান্তের গ্রামগুলো উৎসবের আনন্দে মেতে উঠল এমন নানা ভাবে।
লক্ষ্মীপুজোর দিন ফি বছরই ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তেহট্টের নতিপোতার পারিজাত ক্লাব। দুর্গাপুজো নয়, লক্ষ্মীপুজোই যেন এই গ্রামের সবথেকে বড় উৎসব। আর সেই উৎসবের দিন গোটা গ্রাম হাজির হয় ফুটবল মাঠে। উমা বাবার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে এই গ্রামের মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসেন। রাখি বিশ্বাস, কেয়া মণ্ডলরা বলেন, “দুর্গাপুজো নয়, স্বামী, ছেলেপুলেকে নিয়ে আমরা বাবার বাড়ি আসি লক্ষ্মীপুজোর সময়।” গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, ৩৬ বছর ধরে গ্রামে লক্ষ্মীপুজোর দিন ফুটবল খেলা হচ্ছে। প্রথম দিকে গ্রামের ছেলেরাই খেলত। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাইরে থেকেও ফুটবলের দল আসতে শুরু করে দেয়।” |
তোরণ। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক। |
ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “এ বছর হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ থেকে মোট আটটি দল যোগ দিয়েছিল একদিনের নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতায়। ফাইনালে শ্যামনগর পি এম একাদশ ১-০ গোলে ডোমকল নিউ স্টার ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। সকাল সকাল বাড়ির কাজ, পুজো সেরে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছিল খেলা দেখতে।” করিমপুরের বাথানপাড়ার সৌদামিনী সংসদের পুজো এবার ২৫ বছরে পা রাখল। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা বাপ্পাদিত্য চৌধুরীর কথায়, “আমাদের এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। সব সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে ওঠেন উৎসবের মেজাজে।আমাদের এই পুজোর চাঁদা তোলা থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন সবকিছুতেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলায় জাহাঙ্গির সেখ, ইন্দাদুল বিশ্বাসরা।” অন্যদিকে করিমপুরের লক্ষ্মীপাড়ার আলোকপাত ক্লাবের পুজো এবারে ৫৮ বছরে পড়ল। প্রতি বারের মতো এবারেও এই পুজোয় থাকছে নতুন ধরনের চমক। বড় বাজেটের এই পুজোয় এবার দেখা যাবে আইফেল টাওয়ার, কেদারনাথের ধ্বংসলীলা। থাকছে চন্দননগরের আলো। পুজো কমিটির সম্পাদক অরুপ বিশ্বাস বলেন, “চেষ্টা করি নতুন কিছু বিষয় রাখতে। এবারেও পুজো উপলক্ষে সাত দিন ধরে চলবে মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।” পাট্টাবুকার ভোরের আলো ক্লাবও বেশ জমক করে আয়োজন করছে লক্ষ্মী পুজোর। ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “আমাদের পুজো এবার ১৬ বছরে পা রাখল। পুজো উপলক্ষে মেলা বসছে। থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।” এভাবেই সীমান্তের শিকারপুর থেকে শিশা, নাজিরপুর থেকে নাটনা শঙ্খ বাজিয়ে বরণ করল লক্ষ্মীকে। |