|
|
|
|
জল নামেনি, পাঁশকুড়া-তমলুকে পৌঁছয়নি ত্রাণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
বাঁধভাঙা জলে মঙ্গলবার ডুবেছিল ঘরদোর, চাষজমি। তিন দিন পরেও জলমগ্ন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও পাঁশকুড়া ব্লকের ২০০ গ্রাম। নন্দকুমারের কিছু এলাকাতেও জল ঢুকেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। সেই সঙ্গে উঠতে শুরু করেছে অপর্যাপ্ত ত্রাণের অভিযোগ।
গত বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু এলাকায় ত্রাণ বিলি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন পূর্ব মেদিনীপুরেও যান তিনি। কোলাঘাটে প্রশাসনিক বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস ছিল, “আমরা যুদ্ধকালীন তত্পরতায় কাজ করছি।” |
|
খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মোহন দাসের তোলা ছবি। |
তার পরেও তমলুক ও পাঁশকুড়ার বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। ত্রাণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঁশকুড়ার রানিহাটিতে পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা। বাঁধ মেরামত দেখতে আসা ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) অজয় নন্দর সামনেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “জলমগ্ন গ্রামগুলি প্রত্যন্ত এলাকায়। ফলে ত্রাণ পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। অপ্রতুল ত্রাণের বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।”
ত্রাণ পৌঁছতে অসুবিধার কথা মানছেন জেলাশাসকও অন্তরা আচার্যও। তাঁর বক্তব্য, “ত্রাণসামগ্রী পর্যাপ্তই রয়েছে। তবে অনেক এলাকায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে শিবিরে আসতে চাইছেন না। সেখানে বাড়ি পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে।” শুভেন্দুবাবুর উদ্যোগে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার দুর্গতকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু জল নামছে না কেন?
প্রশাসনের বক্তব্য, এমনিতেই রানিহাটি নিচু এলাকা। গত অগস্টেই সেখানে কাঁসাইয়ের বাঁধ একবার ভেঙেছিল। তখন যে জল ঢুকেছিল, তা নামতে নামতেই দ্বিতীয় বার বাঁধ ভাঙে। ফলে জমা জলের পরিমাণ বেশি ছিল। শুভেন্দুবাবু বলেন, “বিহার, ঝাড়খণ্ড ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের জল কাঁসাই হয়ে পাঁশকুড়া দিয়ে তমলুকের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসিয়েছে। এলাকায় কয়েকটি নিকাশি খাল থাকলেও এত বিপুল পরিমাণ জল এসেছে যে, তা চট করে বেরোতে পারছে না।” |
|
তমলুক থেকে বন্যা দুর্গতদের জন্য খাবার এসেছে অনন্তপুরে। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি। |
তমলুকের জমা জল শঙ্করআড়া, পায়রাটুঙ্গি, গঙ্গাখালি ও প্রতাপখালি খালের মাধ্যমে রূপনারায়ণে পড়ে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, ঠিক মতো সংস্কার না হওয়ায় খালগুলি দিয়ে যথেষ্ট গতিতে জল যাচ্ছে না। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খাল সংস্কার নিয়ে অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। পায়রাটুঙ্গি, গঙ্গাখালি খাল ফের সংস্কার করা হবে।” জেলাশাসক জানিয়েছেন, খাল লাগোয়া এলাকার আগাছা, আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য সেচ দফতর ও পুলিশ যৌথ ভাবে কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে, খালগুলি দিয়ে দ্রুত জল নামবে।
রানিহাটিতে কংসাবতীর বাঁধের ভাঙা অংশের মেরামতির কাজ এ দিন পৌঁছেছে প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে এখনও ১৪৭টি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ৩২ হাজার দুর্গত। অপ্রতুল ত্রাণের অভিযোগ পাঁশকুড়াতেও। পুরুষোত্তমপুর পঞ্চায়েতের কলাগেছিয়া পশ্চিম গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১,৭০০। এ দিন পঞ্চায়েত অফিস থেকে যে ত্রাণ বরাদ্দ করা হয়েছে তা কম বলে মানছেন অনেকেই। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের প্রতিনিধি মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেন, “দুর্গত বাসিন্দার তুলনায় ত্রাণ বেশ কম। কী ভাবে এই সামগ্রী বিলি করা হবে, সেটাই এখন ভাবনা।”
|
পুরনো খবর: জল নামলে এক ইঞ্চি রাস্তাও কাঁচা থাকবে না, আশ্বাস পঞ্চায়েত মন্ত্রীর |
|
|
|
|
|