|
|
|
|
তোলা হয়নি কাঠামো, মানছেন উদ্যোক্তারাই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর |
কিছু কিছু সর্বজনীন মণ্ডপের এবং বাড়ি পুজোর প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে বিজায়া দশমীর দিন। আবার কোথাও কোথাও সোমবার, একাদশীর দিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত একে একে প্রতিমা বিসর্জন করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। কিন্তু এই প্রতিমা বিসর্জনের ঠেলায়, কী শহর কী মফস্সল এলাকার জলাশয় এবং লাগোয়া এলাকাগুলি দূষণে ভরে গিয়েছে। কোথাও গন্ধে টেকা দায়। তো আবার কোথাও কোথাও আবর্জনার স্তূপ জমেছে। এ বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তারা মুখ না খুললেও, তাঁরা এর দায় কিন্তু এড়াতে পারেন না বলে দাবি বাসিন্দাদের। শহর এলাকায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ চেয়ে এর একটা বিহিত করার দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। |
|
বোলপুরের ভুবনডাঙা পুকরের মতো বহু জলাশয়েরই এখনও এই অবস্থা।
শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
দুর্গাপুজোকে ঘিরে কী শহর, কী মফস্সল সর্বত্রই আনন্দের খামতি নেই। কিন্তু এই আনন্দে পুজো উদ্যোক্তারা বেমালুম ভুলে যান প্রতিমা বিসর্জনের পরে জলাভূমিকে দূষণমুক্ত রাখার বিষয়টি। বিসর্জনের কয়েকদিন পরেও পচা ফুল, ফল-সহ আরও নানা জিনিসপত্র এ-দিক ও-দিক ফেলা থাকে। এলাকার নানা পুকুর এবং জলা জায়গায় পা ফেলার উপায় থাকে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের আরও ক্ষোভ, জলাভূমিকে পরিষ্কার রাখতে
তৃণমূল পরিচালিত বোলপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবেকানন্দ বিদ্যালয় লাগোয়া ‘কালীপুকুরে’ বিসর্জন হয় হাটতলা, ভিকিরিবাঁধ, অধ্যাপক কলোনি এবং দেবেন্দ্রগঞ্জ-সহ ওই এলাকার নানা ছোট-বড় প্রতিমা। কাছারিপট্টি ‘চট্টোপাধ্যায় পুকুরে’ বিসর্জন হয় ওই পাড়ার যুব সম্প্রদায়ের প্রতিমা। ‘কাশিমবাজার পুকুরে’ প্রতিমা বিসর্জন করে কাশিমবাজার পুজো কমিটি, বিএসিএ মিশন কম্পাউন্ড এবং ত্রাণসমিতি। রেল লাইনের ওপারে ‘বারিপুকুরে’ প্রতিমা বিসর্জন করে আদ্যাশক্তি সঙ্ঘ, নিচুপট্টি, বিল্লদা পাড়া। শুঁড়িপাড়া, অগ্রগামী সঙ্ঘের প্রতিমা বিসর্জন হয় ‘বেড়াপুকুরে’। ‘গঙ্গাসাগর পুকুরে’ প্রতিমা বিসর্জন করে শুঁড়িপাড়ার পঞ্চাননতলা সেবা সমিতি। ধর্মরাজতলা, আরবিন্দ সঙ্ঘ ‘ঠাকুরপুকুরে’ এবং ‘খাদিপুকুরে’ আদিত্য সঙ্ঘ প্রতিমা বিসর্জন করে। সংগ্রাম সঙ্ঘ ‘মাধু পুকুরে’ এবং উকিলপট্টির সরস্বতী মন্দির ‘তালবোনা পুকুরে’ প্রতিমা নিরঞ্জন করে। এ ছাড়াও শহরের জামবুনি, ভুবনডাঙা-সহ একাধিক সর্বজনীন এবং বাড়ি পুজোর প্রতিমা বিসর্জন হয় স্থানীয় মণ্ডপ লাগোয়া পুকুরে। কোমরপুকুর, দুলিপুকুর, সরপুকুরের মতো জায়গায় বাসিন্দারা কেউ কেউ স্নানও করেন। ফলে এমন আবর্জনাময় পরিবেশে টেকা দায় হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
কিন্তু কোনও তরফ থেকে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? তার স্পষ্ট উত্তর অবশ্য মেলেনি। তবে বিসর্জনে ব্যবহার হওয়া পুকুর এবং জলাশয়গুলিতে আবর্জনা জমার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অনেক পুজো উদ্যোক্তারা। অবিলম্বে ওই সব জলাশয় বা পুকুরগুলি পরিষ্কার করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বোলপুরের কাছারিপট্টি যুব সম্প্রদায়ের পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম সুদীপ মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় চট্টোপাধ্যায় পুকুর অবিলম্বে পরিষ্কার করা হবে।” শুঁড়িপাড়া অগ্রগামী সঙ্ঘের সম্পাদক চন্দন মণ্ডল বলেন, “দিন দু’য়েকের মধ্যে স্থানীয় বেড়াপুকুর পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।” এ দিকে, বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলেন, “স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তাদের বিষয়টি আগেই জানানো হয়েছে। উৎসবের মরসুমে পর পর ছুটি থাকায় পুকুর, ঘাট, জলাশয় সংস্কার করা যাইনি। আমরা দিন দু’য়েকের মধ্যে সব পরিষ্কার পরিছন্ন করে দেব।” |
|
|
|
|
|