|
|
|
|
সারমেয় নিয়ন্ত্রণে নেই পুর-পরিকাঠামো,
সামাল দিতে ভরসা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতার লাগোয়া দুই পুর এলাকা রাজপুর-সোনারপুর এবং মহেশতলা। কিন্তু এই দু’টি পুরসভায় আজও বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণের কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। রাস্তায় কোনও কুকুর অসুস্থ বা পাগল হলে তাদের চিকিৎসা করার সুযোগ না থাকায় অন্য কোনও এলাকায় ছেড়ে দিয়ে আসা বা মেরে ফেলা ছাড়া কিছু করার থাকে না বলে জানালেন বাসিন্দারা। যদিও পুর কর্তাদের যুক্তি, এই ধরনের সমস্যা হলে পশুপ্রেমী বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় পরিস্থিতির সামাল দেওয়া হয়।
দুই পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে জখম হওয়ার ঘটনা সারা বছর লেগেই থাকে। অনেক সময় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে পথ চলা দায় হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন মহলে এই সমস্যার কথা জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। ক্ষোভের সুরে মহেশতলার বাসিন্দা প্রাণেশ হালদার বললেন, “ এটি সারা বছরের সমস্যা। সমাধানের দায়িত্ব যাঁদের, তাঁদের কাছে এই ধরনের সমস্যার কোনও গুরুত্ব নেই।” |
|
গত দুই দশকে কলকাতা লাগোয়া এই দুই এলাকায় জনবসতি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত বদলে যাচ্ছে এলাকার জীবনযাপনের মান। তাই দুই পুরসভায় কুকুর বা এ ধরনের প্রাণীর নানা সমস্যা সমাধানের জন্য নিজস্ব পরিকাঠামো রাখা দরকার বলে স্বীকার করেছেন এই দুই পুরসভার কর্তৃপক্ষ। যদিও এখনও পর্যন্ত এই সব নিয়ে কোনও পরিকল্পনা হয়নি বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের দুলাল দাস জানান, কোনও ওয়ার্ড থেকে কুকুর মারা গিয়েছে খবর এলে পুরকর্মীরা গিয়ে তা ভাগাড়ে ফেলে দিয়ে আসেন। এই পরিষেবার জন্য বাসিন্দাদের পুরসভাকে কিছু টাকা দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, “কোনও কুকুর অসুস্থ বা পাগল হলে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকাঠামো আমাদের নেই।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণেরও ব্যবস্থা নেই এই পুর এলাকায়।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ক্ষেত্রেও এই সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষোভ রয়েছে। মহামায়াতলার বাসিন্দা রাজা সরখেল জানান, এই পুর এলাকায় অনেক জায়গা আছে যেখানে কুকুর অসুস্থ বা পাগল হলে এখনও পিটিয়ে বা বিষ খাইয়ে মেরে ফেলাটাই রেওয়াজ। এই সব বিষয়ে অধিকাংশ বাসিন্দার মধ্যে সচেতনতার অভাবও রয়েছে। পুরসভাও এই সমস্যাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না বলে রাজাবাবু অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়: “পুর কর্তৃপক্ষকে অনেক বার জানানো হলেও এই সমস্যা নিরসনে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।”
কেন ব্যবস্থা নেওয়া গেল না? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজপুর-সোনাপুর পুরসভার পূর্বতন বোর্ডের উপ পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সমস্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পুর কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। আমাদের সময়ে এই সমস্যা নিরসনের এক বার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ তখন বেশি দূর এগোয়নি।”
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেওয়ারিশ কুকুর ধরা বা নিয়ন্ত্রণ করার নূন্যতম পরিকাঠামো পুরসভার নেই।
এই নিয়ে কোনও পরিকল্পনা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে করা হয়নি। সমস্যার কথা স্বীকার করে এলাকার বিধায়ক এবং পুরসভার বর্তমান উপ পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও পরিকাঠামো আমাদের নেই। সমস্যা হলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নেওয়া হয়।” |
|
|
|
|
|