ঘরের অর্থনীতিতে চাকা ঘোরার আশা। আর বাইরে সঙ্কট কাটার স্বস্তি। মূলত এই জোড়া কারণে ভর করেই শুক্রবার ৪৬৭.৩৮ পয়েন্ট উঠল সেনসেক্স। দৌড় শেষ করল ২০৮৮২.৮৯ অঙ্কে। গত তিন বছরে যা সব থেকে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে এবং আন্তর্জাতিক আঙিনায় সাম্প্রতিক অনেক ঘটনাই পালে বাতাস জুগিয়েছে শেয়ার বাজারের। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম অনেকখানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে (এ দিন অবশ্য চার পয়সা পড়েছে)। মুখ তুলতে শুরু করেছে পরিকাঠামো। ভাল বর্ষার দরুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কৃষিপণ্যের উত্পাদন ভাল হওয়ার। আর শেষ পর্যন্ত তা হলে, মূল্যবৃদ্ধির হার কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা। আশা করছেন, তখন প্রশস্ত হবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর পথও।
বাজারকে স্বস্তি জুগিয়েছে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর মার্কিন প্রশাসনের তালা খোলাও। ওবামার দেশ যে সময় থাকতে ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়াতে পেরেছে, তাতে হাঁফ ছেড়েছে বিশ্ব। তার উপর বৃদ্ধির গতি ঢিমে হওয়ার আশঙ্কাকে উড়িয়ে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ৭.৮% বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে চিন।
আর এই সমস্ত কিছুর প্রভাবই এ দিন চাঙ্গা করেছে সেনসেক্সকে। উত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছে ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন ব্লু-চিপ শেয়ারের চড়া চাহিদাও। আমেরিকা ও চিনের থেকে পাওয়া জোড়া স্বস্তি এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজারেরও ওঠার কারণ হয়েছে।
হয়তো এই সব কারণেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মুনাফার টাকা ঘরে তোলার তাগিদে সেনসেক্স মাঝেমধ্যে পড়বে ঠিকই। কিন্তু এখনই বড় মাপের পতনের সম্ভাবনা কম। অবশ্যই যদি হঠাত্ বড় কিছু না ঘটে। অর্থাত্ মোটের উপর এখন সূচকের মুখ উপরের দিকেই থাকার সম্ভাবনা। তবে আগামী লোকসভা ভোটে দিল্লিতে স্থায়ী সরকার আসার আগে বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিরতা আসার সম্ভাবনা যে কম, তা অবশ্য মেনে নিচ্ছেন তাঁরা।
বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খন্ডেলওয়াল বলেন, “দেশে ও আন্তার্জাতিক ক্ষেত্রের পরিস্থিতি বাজারের অনুকূলে আসছে। তবে ভোটের আগে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম।”
তবে আপাতত ভারতীয় অর্থনীতির উপর বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির আস্থা যে অনেকটাই ফিরেছে, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। কারণ, শুক্রবার মিলিয়ে টানা দশ দিন এ দেশের বাজারে তুলে নেওয়ার তুলনায় বেশি ডলার লগ্নি করেছে তারা। তার মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবারই ১১০৯.৯৩ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে তারা। |