আশঙ্কার মেঘকে দূরে ঠেলে মঙ্গলবার সেনসেক্স উঠল ৭২৭ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ। গত ২৫ জুলাইয়ের পর এ দিনই প্রথম ২০ হাজারও ছুঁল সেনসেক্স। বাজার বন্ধের সময়ে তা সামান্য কমলেও ছিল ২০ হাজারেরই কাছে ১৯,৯৯৭ অঙ্কে।
২০০৯ সালের ১৮ মে প্রায় ২১১১ পয়েন্ট (১৭.৩৪%) বাড়ার পর সেনসেক্স এক দিনে এত বেশি বাড়েনি। গত চার দিনের লেনদেনে সেনসেক্স বাড়ল ১৭৬২ পয়েন্ট বা ১০ শতাংশ। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, সেনসেক্সের এই ‘ম্যাজিক’ উত্থানে যে সমস্ত কারণ ইন্ধন জুগিয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল:
• মিত্র রাষ্ট্র রাশিয়ার হস্তক্ষেপে সিরিয়ায় মার্কিন হামলার আশঙ্কা ক্রমে স্তিমিত হয়ে আসা
• মার্কিন শেয়ার বাজারে চাঙ্গা ভাব
• ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার ১৪০ পয়সা বৃদ্ধি। যার জেরে টাকা উঠে এসছে ৬৩.৮৪-এ
• বিদেশি লগ্নিকারীদের ফিরে আসা
• অগস্টে রফতানি ১৩% বাড়ার হাত ধরে বাণিজ্য ঘাটতি কমে যাওয়া
• টানা ন’মাস বাদে অগস্টে যাত্রী গাড়ি বিক্রি ১৫% বাড়া
• ঢালাও আর্থিক সংস্কার নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নর রঘুরাম রাজনের প্রতিশ্রুতি, যা শেয়ার বাজার মহল ‘রাজন এফেক্ট’ আখ্যা দিয়েছে
• টুজি স্পেকট্রাম নিলামের ন্যূনতম দর ৬০% পর্যন্ত কমাতে ট্রাইয়ের প্রস্তাব
• চিনে আর্থিক বৃদ্ধির ভাল হার |
এতগুলি ইতিবাচক কারণ সম্মিলিত ভাবে লগ্নিকারীদের উত্সাহ জোগানোয় তাঁরা ফের বাজারমুখী হয়েছেন। সেনসেক্সের প্রতি ১০টি শেয়ারের মধ্যে ৬টির দামই এ দিন বেড়েছে। আর, এই উত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে গাড়ি, টেলিকম, মূলধনী পণ্য সংস্থার শেয়ার।
এর মধ্যে সিরিয়ায় মার্কিন হানার সম্ভাবনা কমে যাওয়াকে ভাল রকম গুরুত্ব দিচ্ছে শেয়ার বাজার মহল। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে দেশে মজুত রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে সিরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও বলেছেন, সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণ করলে হামলার পরিকল্পনা স্থগিত করে দেওয়া হবে। ওবামার আশ্বাসে বিশ্ব বাজারে কমেছে তেলের দরও।
ডলারে টাকার দাম এ দিন ১৪০ পয়সা বেড়েছে, যা গত দু’সপ্তাহে সর্বোচ্চ। মূলত ব্যাঙ্ক ও রফতানিকারীদের ডলার বিক্রির জেরেই দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৩.৮৪ টাকা। ঊর্ধ্বমুখী টাকা এ দিন সেনসেক্সকে টেনে তুলতে সাহায্য করেছে।
অন্য দিকে, সোনা আমদানি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার ফলেই অগস্টে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি নেমে এসেছে ১০৯০ কোটি ডলারে। গত ৪ মাসে তা সবচেয়ে কম। গত অর্থবর্ষের অগস্টের তুলনায় এই ঘাটতি ৩৮০ কোটি ডলার কম। এ নিয়ে পরপর দু’মাস রফতানি বাড়ল ১৩%। আমদানি অগস্টে কমেছে ০.৬৮%। বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেন, “ব্রিটেন-সহ প্রধান প্রধান অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতি ফিরে আসতেই ভারতের রফতানি বেড়েছে।” বৈদেশিক মুদ্রার চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি বা ক্যাড কমাতেও তা সাহায্য করবে বলে সরকারি সূত্রে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
|