|
|
|
|
খনির কাজে সিটুর বাধা, তৃণমূলের ‘বোমাবাজি’
নিজস্ব সংবাদদাতা • অন্ডাল |
ইসিএলের আউটসোর্সিংয়ের কাজে বাধা দিতে আসা সিটু সমর্থকদের হটাতে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ইসিএল এবং শাসকদল, উভয় পক্ষই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বর্ধমানের অন্ডালে অন্য সংস্থাকে দিয়ে দ্রুত কয়লা কাটানোর যে সিদ্ধান্ত সিটুর বাধায় দু’দশক আগে থমকে গিয়েছিল, শুক্রবার তা শুরু হল।
ইসিএল সূত্রে জানা যায়, কয়লাখনি জাতীয়করণ হওয়ার আগে বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ খনি থেকে কয়লা তোলায় পরে পরিত্যক্ত ওই সব খনি অগ্নিপ্রবণ হয়ে যায়। জাতীয়করণের পরে বিশেষজ্ঞেরা জানান, অগ্নিপ্রবণ এলাকা কয়লা কেটে তুলে না নিলে ভূগর্ভস্থ আগুন এবং সংলগ্ন জনপদের বিপদ এড়ানো যাবে না। ১৯৯২ সালে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য মজুত কয়লা কেটে নিতে অন্ডালের কাজোড়া এরিয়ায় জামবাদ খোলামুখ খনি চালু করা হয়েছিল। পরের বছর, ১৯৯৩ সালের মাঝামাঝি দ্রুত কয়লা কেটে নেওয়ার লক্ষ্যে খোলামুখ খনির বর্ধিতকরণের কাজ আউটসোর্সিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সিটুর নেতৃত্বে এলাকার কিছু বাসিন্দা নানা দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেন।
ইসিএল যে সংস্থাকে কাজ দিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ তারা খনি এলাকায় একটি পে-লোডার যন্ত্র নিয়ে আসে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সিটুর নেতৃত্বে কয়েকশো বাসিন্দা যন্ত্রটি আটকে দেন। ইতিমধ্যে তৃণমূল সর্মথকরা তাদের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে খনন এলাকায় চলে আসেন। তর্কাতর্কি, হইচই চলতে-চলতেই হঠাত্ দুপুর ১২টা নাগাদ পরপর চারটি বোমা ফাটে। সিটু নেতা জয়ন্ত রায়ের অভিযোগ, “তৃণমূলের লোকেরা অতর্কিতে বোমা ছুড়তে থাকে। ভয়ে বাসিন্দারা পে-লোডারটি ছেড়ে সরে যায়। তৃণমূল সমর্থকেরা তাতে চালককে তুলে পে-লোডার নিয়ে যায়। এর পরে নরেনবাবু নারকেল ফাটিয়ে কাজের সুচনা করেন।” |
|
জামবাদ খোলামুখ খনিতে কাজ শুরু হল শুক্রবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ। |
নরেনবাবু অবশ্য পাল্টা বলেন, “বোমাবাজির অভিযোগ মিথ্যা। এই খনিতে ৪২০ জন কাজ করেন। বর্ধিতকরণের কাজ শুরু না হলে তাঁদের অন্যত্র বদলি হতে হবে। এই এলাকা বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের শিকার হবে। জেলা পরিষদ সদস্য হিসাবে আমাকে নারকেল ফাটিয়ে কাজ শুরু করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাই আমি এসেছি।” সিটুর দাবি, জামবাদ মোড় ও পরাশকোল ডাঙায় বসবাসকারী ২৭৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন দিতে হবে। ১৯৯২ সালে খোলামুখ খনি চালু করার আগে ইসিএল ওই এলাকায় স্টেডিয়াম ও রাস্তা নির্মাণ তথা সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করতে হবে। অন্যথায় আবার কাজ আটকে বিক্ষোভ দেখানো হবে।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের জানা নেই। তবে সংস্থার নিজস্ব জমিতেই খননকাজ হচ্ছে। কয়েকশো পরিবার ওই জমি জবরদখল করে রয়েছে। বাসাবদল করার জন্য ‘মানবিকতার খাতিরে’ তাদের ১০ হাজার টাকা করে দিতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিবারগুলি তা নিতে রাজি হয়নি। নীলাদ্রিবাবু বলেন, “ওই এলাকায় মাটির নীচে ৯ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত আছে। সময়ে না কেটে নিলে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে জনপদের বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।”
|
পুরনো খবর: প্যাচের কাজে বাধা দিচ্ছে সিটু, অভিযোগ ইসিএলের |
|
|
|
|
|