হাতে সময় কম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের জন্য হুগলি জেলার বিভিন্ন সরকারি ব্যাঙ্কে ছাত্রীদের নামে ‘জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খোলার কাজ চলছে জোরকদমে। প্রায় রোজই গুচ্ছ গুচ্ছ আবেদন জমা পড়ছে ব্যাঙ্কগুলিতে। প্রথম পর্যায়ে জেলার ৩৫টি স্কুল ও হোমের প্রায় সাড়ে ছ’শো ছাত্রীকে প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানায়।
গরিব পরিবারের মেয়েদের পড়াশোনার কথা ভেবেই ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে সব পরিবারের বার্ষিক আয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বা তার কম, সেই সব পরিবারের মেয়েরাই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। অষ্টম-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের বছরে ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে বয়স ১৮ হলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা পাবে তারা।
রাজ্য জুড়ে প্রকল্পের আওতায় আসবে প্রায় ৮ লক্ষ কিশোরী। প্রথম পর্যায়ে অবশ্য ১০ হাজার ছাত্রীকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। আগামী ১ অক্টোবর কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম পর্যায়ে যারা প্রকল্পের আওতায় আসছে, তারা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে। এর মধ্যে কোন জেলার কত জন ছাত্রী থাকবে, তা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। এখন তাদেরই ‘জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খোলা হচ্ছে। হুগলিতে উপভোক্তা নির্বাচনের জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের তত্ত্বাবধানে বিডিওদের প্রধান করে ছ’জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে।
তবে, ১ অক্টোবরের অনুষ্ঠানে যে ছাত্রীদের ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে, তাদের বিষয়টি সরাসরি জেলা স্কুল পরিদর্শকই তদারক করছেন। প্রকল্পটি চালু থাকলেও প্রথম পর্যায়ে কিছু স্কুলের কিছু ছাত্রীর নাম ওই তালিকায় না-থাকায় তাদের অভিভাবকেরা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
জেলা স্কুল পরিদর্শক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে উপভোক্তা নির্বাচনের জন্য কিছু আবেদনপত্রে ত্রুটি থাকায় তা বাতিল করা হয়েছে। তবে, ওই সব ছাত্রীরা সরকারি নিয়ম মেনে যথাযথ নথিপত্র দিয়ে আবেদন করলে পরবর্তী পর্যায়ে তাদের প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ১ অক্টোবরের জন্য সাড়ে ৬০০ ছাত্রী প্রকল্পের আওতাভুক্ত হচ্ছে।
গরিব পরিবারের ছাত্রীদের ওই প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য ‘জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খুলতে কোনও সমস্যা নেই বলে জেলার ‘লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক’-এর পক্ষে অশোককুমার দাস দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “বিভিন্ন স্কুলের জন্য ফর্ম পাঠানো চলছে। একই সঙ্গে আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে ছাত্রীদের অ্যাকাউন্টও খোলা হচ্ছে।”
|