রাজ্য সরকারের খয়রাতের তালিকায় নবতম সংযোজন বারোয়ারি দুর্গাপুজো।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, অসচ্ছল ক্লাবগুলিকে দুর্গাপুজো করতে আর্থিক সাহায্য দেবে সরকার। প্রতি জেলায় একটি করে এবং কলকাতার ১০টি ক্লাবকে অর্থসাহায্য করবে দমকল, পূর্ত, আবাসন ও যুব কল্যাণ এবং পরিবহণ দফতর। এ ছাড়াও ৫০টি অসচ্ছল ক্লাবকে বেছে নিয়ে অর্থসাহায্য দেবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতর, যে ক্লাবগুলি সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া ‘বিশ্ব বাংলার উন্নয়ন’-এর লোগো পুজো মণ্ডপে ব্যবহার করবে।
দু’দফায় রাজ্যের প্রায় চার হাজার ক্লাবকে এর আগেও আর্থিক সাহায্য দিয়েছে সরকার। আজ, শনিবার এক সরকারি অনুষ্ঠানে আরও দু’হাজার ক্লাবকে সাহায্য দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে এ দিন সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সব ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সমন্বয় সভা আয়োজন করেছিল কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ। কলকাতার বেশ কিছু দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতারাও সেখানে ছিলেন। প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ক্লাবগুলিকে সরকারি সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
কিন্তু কেন এই সাহায্য? মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “অনেক ছোট ক্লাব রয়েছে, যারা পুজো করতে গিয়ে ভাল বিজ্ঞাপন পায় না, হোর্ডিং পায় না। কিন্তু নিয়মকানুন মেনে, পরিবেশ আইন মেনে ওই সব ক্লাবের উদ্যোক্তারা পুজো করেন। ওই সব ক্লাবের প্রতিও সরকারের দায়িত্ব রয়েছে।”
সেই সভাতেই সঙ্গে ইমামদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের যা আছে, তা আপনারা উৎসবের মরসুমেই পেয়ে যাবেন।” ইমামদের ভাতা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা হয়েছিল হাইকোর্টে। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত সরকারের বিরুদ্ধে গেলেও তাঁর সিদ্ধান্ত যে বদলাবে না, তা এ দিন স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তাঁর দুর্গাপুজোয় আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্তকে ইমাম-ভাতা নিয়ে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন অনেকে।
সভায় হাজির চারটি দফতরের মন্ত্রীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গরিব ক্লাবগুলিকে কতটা কী ভাবে সাহায্য করা যায় তা দেখতে বলছি।” আবার কলকাতার মেয়র এবং পুলিশ কমিশনারকেও কলকাতার দশটি আর্থিক ভাবে দুর্বল ক্লাবকে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে তিনি বলেছেন, “ভাল পুজো করার জন্য পুরস্কৃত হবে, এমন উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়াতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব, “কলকাতার বড় ক্লাবগুলি পাঁচটি করে ছোট ক্লাব বাছাই করে নিয়ে পুজোর জন্য তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দিক।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুজোর কলকাতায় ১০০ দিনের কাজের টাকায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে। পুলিশ কমিশনারকে তাঁদের জন্যও আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। |