অবশেষে গেটের তালা খুলল ক্রাইস্ট চার্চে, স্বস্তিতে সবাই
বশেষে ছন্দে ফিরল দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুল। বৃহস্পতিবারই স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, শুক্রবার স্কুল খুলবে। তাই এ দিন অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিল ছাত্রীরা। স্কুলের প্রথম বাসটি ঢুকল সওয়া ৯টা নাগাদ।
ষষ্ঠ শ্রেণির অঙ্কিতার মা বললেন, “আজ মেয়ে ভোরবেলাই উঠে পড়েছে। এত উৎসাহ নিয়ে আগে ওকে স্কুলে আসতে দেখিনি।” অঙ্কিতার কথায়, “বাড়িতে থেকে ভাল পড়া হচ্ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে দেখাও হচ্ছিল না। এখন খুব ভাল লাগছে।”
গত দু’সপ্তাহ ধরে স্কুল গেটের সামনে ছিল শুধু পুলিশ-সাংবাদিকের ভিড়। এ দিন চোখে পড়ল স্বাভাবিক ছবিটা। স্কুলের উল্টো দিকে বইখাতার দোকান খুলে গিয়েছে। আইসক্রিম, ফুচকা, আচারওয়ালারাও হাজির। অনেক দিন পরে বন্ধুদের পেয়ে পড়ুয়াদেরও হুটোপাটির শেষ নেই।
তবে অভিভাবকদের একাংশ একটু চিন্তায় ছিলেন মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে। যারা স্কুলবাসে আসে, তাদের অনেকেই তাই এসেছিল অভিভাবকদের সঙ্গে। তবে কয়েক জন ছাত্রী এ-ও জানাল, তারা চাইছে প্রধান শিক্ষিকা হেলেন সরকারও যেন তাড়াতাড়ি স্কুলে ফিরে আসেন।
স্কুলে ফিরে খুদে পড়ুয়াদের উচ্ছ্বাস। শুক্রবার। ছবি: শৌভিক দে।
তবে এত কিছুর মধ্যেও মনখারাপটা রয়েই গেল। সকাল ৯-৪৫ নাগাদ স্কুলে ঢোকে চার নম্বর বাসটা। তাতেই রোজ আসত ঐন্দ্রিলা। পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বলল, “আমাদের সঙ্গেই আসত ঐন্দ্রিলা। আমরা এক সেকশনে ছিলাম না। কিন্তু খুব বন্ধুত্ব ছিল ওর সঙ্গে।” ওই বাসেরই এক ছাত্রী বলল, “ঐন্দ্রিলা যে আর কোনও দিন ওদের পাড়ার বাসস্টপ থেকে উঠবে না, ভাবতেই পারছি না।”
তবে শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়েই স্কুলে ক্লাস শুরু হয়েছে। ছুটির পরে ছাত্রীরা জানিয়েছে, ঠিক মতোই সব ক্লাস হয়েছে। প্রার্থনার সময়ে ঐন্দ্রিলার প্রসঙ্গ উঠেছিল। তার আত্মার শান্তি কামনা করেছে সকলে।
চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়ার কলকাতা ডায়োসেসের সাম্মানিক সচিব আবির অধিকারী বললেন, “৮০ শতাংশ ছাত্রী স্কুলে এসেছে। যারা হস্টেলে থাকে, তারাও রবিবারের মধ্যে চলে আসবে।” কর্তৃপক্ষ জানান, পরীক্ষাও শুরু হবে ১৯ নভেম্বর থেকে। ক্লাস চলাকালীনই মেরামতির কাজ চলবে। তাতে পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটবে না।
স্কুলে যেতে পারল না শুধু পাপিয়া মজুমদার ও রেশমি দে-র মেয়েরা। এখনও ঘরছাড়া ওই দু’জন। পুলিশ তাঁদের খুঁজছে। সংবাদপত্রে ও টিভিতে সকলে দেখেছে, ওই দু’জন ভাঙচুরে সামিল ছিলেন। পাপিয়ার দাদু দুলালচন্দ্র নন্দী বললেন, “পাপিয়া নিখোঁজ। তবে ওর মেয়েটার জন্য কষ্ট হচ্ছে। ও আজ স্কুলে যেতে পারল না।” ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আর এক অভিভাবিকা শম্পা ঘোষ গ্রেফতার হলেও জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তিনি বললেন, “এক মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েছি। অন্য জনকে সোমবার পাঠাব। সে দিন রাগের মাথায় ভুল করে ফেলেছিলাম। কিন্তু স্কুলের উপরে আমার ভরসা আছে। এ জন্য মেয়েদের সঙ্গে স্কুল খারাপ ব্যবহার করবে না।”
শুক্রবার টিভিতে স্কুল খোলার খবর দেখেছেন ঐন্দ্রিলার বাবা শান্তনু দাস। তিনি শুধু বললেন, “এত মেয়েকে স্কুলের সামনে দেখে আমার সত্যিই খুব ভাল লাগছে। শুধু আমার মেয়েটাই ওখানে নেই। আমাদেরও তাই কোনও ব্যস্ততা নেই সকাল থেকে ওকে স্কুলে পাঠানোর।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.