গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ‘অন্তিম লড়াই’ বলে তিন দিনের বনধ ডাকলেও তার প্রথম দিন, সোমবার কিন্তু পুরোপুরি সাড়া দিল না দার্জিলিং পাহাড়। তবে মোর্চার একজন কট্টর সমর্থক গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে দার্জিলিং শহরে উত্তেজনা বাড়ে। পুলিশকর্মীরা সঞ্জীব লামা নামে ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরে তাঁর গায়ের আগুন নেভান। তাঁকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ভোর সাড়ে পাঁচটায় বনধ শুরুর আগেই কালিম্পংয়ের রংপোয় একটি মোটরবাইক ও একটি ছোট গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনায় পুলিশ ১০ মোর্চা সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। এ দিন পাহাড়ে কড়া পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, মোর্চার ডাকা বন্ধ মোকাবিলা করার জন্য পাহাড়ে আরও পুলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
পাহাড়ের তিন মহকুমার দোকানপাট, বাজার বন্ধ থাকলেও এ দিন সরকারি অফিস অনেক জায়গায় খুলেছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন নিজেও সকাল থেকে অফিসে বসেছেন। রাস্তায় গাড়িও দেখা গিয়েছে। সিকিমের রাস্তায় বেলা ২টো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি দু’ধরনের যানবাহনই চলাচল করেছে। তবে বিকেলের দিকে সিকিমে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় সিকিম রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা। তাতে বিপাকে পড়েন শতাধিক যাত্রী। আজ, মঙ্গলবার পুলিশি নিরাপত্তায় ফের বাস চালানো হবে বলে জানিয়েছে সিকিম পরিবহণ দফতর। |
পুড়ে যাওয়া গাড়ি। রংপোর কাছে ভালুখোলায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ কিন্তু প্রথম দিনের বনধ সফল বলে দাবি করেছেন। তিনি এ দিন দার্জিলিঙে সাংবাদিক বৈঠক করে ফের জিটিএ ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। গুরুঙ্গের বক্তব্য, “আমরা ইচ্ছে করলে জোর করে জেলাশাসকের দফতর বন্ধ করে দিতে পারতাম। কিন্তু তাতে রক্ত ঝরত। আমরা শান্তি চেয়েছি, তাই কিছু করিনি।” সেই সঙ্গেই তিনি ঘোষণা করেন, তেলেঙ্গানা পৃথক রাজ্য হলে গোর্খাল্যান্ডও দিতে হবে বলে তিনি ফের কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “জোর করে বনধ করা যাবে না। এদিন বন্ধ সমর্থনকারীদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট ৬টি মামলা হয়েছে মিরিক, কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি, কালিম্পং এবং দার্জিলিং সদর থানায়। বনধ মোকাবিলার জন্য ১ প্লাটুন মহিলা কনস্টেবল ও ১ প্লাটুন আইআরবি আনা হচ্ছে। মঙ্গলবারই তাঁদের পাহাড়ে চলে আসার কথা।”
যদিও মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি দাবি করেছেন, তাঁদের কোনও কর্মী ভাঙচুর কিংবা অশান্তি ছড়ানোর ঘটনায় যুক্ত নন। তিনি বলেন, “যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে তার জন্য মোর্চার কেউ দায়ী নন। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত আবেগেই বন্ধ করেছে।”
|