নিকিতা খুনে অভিযুক্তকে মারধর আদালত চত্বরে
কাদশ শ্রেণির ছাত্রী নিকিতা দত্তকে গুলি করে খুনে অভিযুক্ত তাপস দাস ওরফে খুলুকে সোমবার আদালত চত্বরে দেখতে পেয়েই উপস্থিত জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাকে মারধরেরও চেষ্টা হয়। তার পিঠে একটা কিলও পড়ে। পুলিশ কোনওমতে তাপসকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচিয়ে আদালতের ভিতরে নিয়ে যায়।
ফালাকাটার সুভাষ কলোনির বাসিন্দা নিকিতাকে রবিবার সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়। তাপস এবং বাকি দু’জন অভিযুক্ত গোপাল আচার্য ও নিকিতার প্রাক্তন গৃহশিক্ষক বিজিত দত্তকে এই দিন আলিপুরদুয়ার মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য অভিযুক্তদের ১৪ জিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজিতের তরফে রণতোষ সাহা নামে একজন আইনজীবী জামিনের আর্জি জানান। অন্য দু’জনের হয়ে কেউ সওয়ালই করেননি। পুলিশ তিন জনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুন ও অস্ত্র আইনে মামলা রজু করেছে। ধৃতদের আদালত থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়েও বিক্ষোভকারীরা ‘দোষীদের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেয়।

অভিযুক্ত খুলু লক্ষ্য জনতার। সামাল দিচ্ছে পুলিশ। ছবি: নারায়ণ দে।
আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “ছাত্রী খুনের মামলায় ধৃতদের এদিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে উত্তেজিত জনতা এক অভিযুক্তের উপরে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে শুনেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। ফালাকাটার কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি ঝোপ থেকে ৭.৬৫ বোরের পিস্তলটি ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃত খুলু ও গোপাল মুঙ্গের থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এনে ডুয়ার্স ও লাগোয়া এলাকায় বিক্রি করত। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিন সকালে খুলু ও গোপালকে ফালাকাটা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য পুলিশ নিয়ে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে গোপালকে চিৎকার করতে শোনা যায়, “আমি পিস্তলের কারবার করি। ১৭ হাজার টাকা পেলেই কয়েক রাউন্ড গুলি পিস্তল তুলে দিতে পারি। জেল থেকে ছাড়া পেলে ওই কারবার চালিয়ে যাব।” পুলিশের সন্দেহ, মাদক পাচার, চোরাই কাঠ, চোরাই বাইকের কারবার, তোলা আদায়ও করত ওই দুজন।
দীর্ঘদিন ধরে আসামাজিক কাজকর্মে যুক্ত বলে এখন সন্দেহ হলেও এতদিন পুলিশ কিছু করেনি কেন? রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূলের অভিযোগ, বামেদের প্রশ্রয়েই রমরমা বেড়েছে খুলুদের। শুধু তাই নয়, সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটেও সিপিএমের হয়ে প্রচার করার কথা দাবি করেছেন গোপাল। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে গোপালের দাবি, “সিপিএম করি। পঞ্চায়েতে সিপিএম-এর হয়ে খেটেছি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক গদাই দে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “খুলু বার বার অন্যায় করেছে। সিপিএম নেতারা তাকে আড়াল করেছেন।”
তবে ফালাকাটার সিপিএম নেতা নিতাইকৃষ্ণ পাল বলেন, “কবে গোপাল আর খুলু সিপিএম করেছিল, তা জানা নেই। কোনওদিন তারা প্রত্যক্ষ ভাবে সিপিএম করেনি। আমরা কোনও রকম প্রশ্রয় দিইনি তাকে। অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমরা চাই তাদের চরম শাস্তি হোক।” তাঁর বক্তব্য, “রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতি যে ভাবে হচ্ছে, তা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে অভিযুক্তদের আমাদের লোক বলে দায় চাপানো হচ্ছে।”
এ দিন নিকিতার শেষকৃত্য হয় ফালাকাটা শ্মশানে। পঞ্চায়েত ভোটের গণনার দিন হলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বহু মানুষ।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.