বিরোধ ছিল সরকারের সঙ্গে। বিরোধের বিষয়ও ছিল হাতের কাছে, রাজ্যে মিড ডে মিল কেলেঙ্কারিতে ২৩টি শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিহার বিধানসভায়, বিরোধী দল বিজেপি লড়ে গেল আর এক বিরোধী দল লালুপ্রসাদের সঙ্গে। পাল্টে গেল লড়াইয়ের মূল ‘ফোকাস’-ই।
অধিবেশনের শুরুতেই বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্ব মুলতুবি রেখে মিড ডে মিল নিয়ে আলোচনার জন্য বিজেপি-র তরফে একটি মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই মুলতুবি প্রস্তাবটি মেনে নেয়নি নীতীশ কুমার সরকার। তবে সরকারপক্ষের বিধায়করা এবং স্পিকার জানান, আলোচনায় তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু ৯১ সদস্যের শক্তিশালী বিরোধী বিজেপি তাদের মুলতুবি প্রস্তাবে অনড় থাকে। বিজেপি বিধায়করা প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে অধিবেশন কক্ষের ভিতরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিজেপি-র এই বিক্ষোভে সামিল হয়নি অপর বিরোধী দল আরজেডি। আরজেডি বিধায়করা নীরব দর্শকের ভূমিকা নেন। হট্টগোলের মধ্যে স্পিকার উদয়নারায়ণ চৌধুরী অধিবেশন এক ঘণ্টা স্থগিত করে দেন। পরে সভা শুরু হতে স্পিকার মিড ডে মিল কেলেঙ্কারি নিয়ে আলোচনায় সম্মতি দেন। আলোচনায় প্রথম বক্তা হিসেবে আরজেডি পরিষদীয় দলের নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকির নাম ঘোষণা করেন স্পিকার।
ফের শুরু হয় হইচই। বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, “প্রথমে আমরা নাম দেওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে আরজেডি নেতাকে প্রথম বক্তা হিসেবে ডাকা হল!” বিজেপি-র বিক্ষোভের সময়ে কক্ষের ভিতরে কয়েকটি ইট-পাটকেলও পড়ে। স্পিকার ফের অধিবেশন স্থগিত করে দেন। আরজেডি নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকি বিধানসভার লবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানান, “গত শনিবারই এই ব্যাপারে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলাম। সেই কারণে বিজেপি-র আগে আমাকে বক্তা হিসেবে ডাকা হয়েছে।” বিজেপি-র প্রস্তাবক বিনোদনারায়ণ চৌধুরী বলেন, “আরজেডি এবং জেডিইউ মিলে আমাদের মোকাবিলা করতে চাইছে।” তাঁর দাবি, “আমি আলোচনা প্রস্তাব জমা দেওয়ার পরে আরজেডি তাদের প্রস্তাব জমা দেয়।” বিধানসভায় এই ঘটনা চলার সময়ে নিজের ঘরে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার থাকলেও তিনি একবারের জন্যও অধিবেশন কক্ষে আসেননি। বিরোধী দলনেতা, বিজেপি-র নন্দকিশোর যাদব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এক বারের জন্য ছপরা তো দূরের কথা, পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও বাচ্চাদের দেখতে গেলেন না। অথচ পায়ে ব্যথা নিয়ে বিধানসভায় আসতে পারছেন।”
জেডিইউ সদস্য মনজিত সিংহ বলেন, “বিজেপি-র হাতে ছিল স্বাস্থ্য দফতর। চক্রান্ত করে স্বাস্থ্য দফতরকে তারা ধ্বংস করেছে। এর জন্য দায়ী বিজেপি-ই।” এই কথায় ফের হট্টগোল হয়।
|