পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম দফার ন’টি জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ৫২৫৬ জন। এর মধ্যে ছ’টি জেলাতেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৪৯৫২-তে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনে করছে, এই প্রবণতা মোটেই স্বাভাবিক নয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সংখ্যাটা এত বেশি কেন, ওই ছ’টি জেলার জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে সে কথা জানতে চাইল কমিশন।
যে ছ’টি জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় বেশি বলে কমিশন মনে করছে, সেগুলি হল বাঁকুড়া, বর্ধমান, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা। ওই ছয় জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের বেশির ভাগই শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থী। প্রথম পর্বেই নির্বাচন হওয়ার কথা হাওড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং পুরুলিয়ায়ও। কিন্তু সেখানে এই প্রবণতা অস্বাভাবিক বলে কমিশন মনে করছে না। বরং প্রথম ছ’টি জেলার তুলনায় এই তিন জেলায় বিনা লড়াইয়ে জয়ের সংখ্যা অনেক কম। তাই ওই ছয় জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। সে কারণেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই জেলাকে রিপোর্ট পাঠাতে বলল কমিশন। তবে এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
কমিশনের সচিব তাপস রায় শুক্রবার বলেন, “জেলাশাসকদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কেন্দ্রগুলি সম্পর্কে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।” কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, সে
সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি। যদি দেখা যায় সন্ত্রাস বা বাধা দানের ফলেই সেখানে অন্য দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন, তা হলে কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে? সচিব বলেন, “এখনই কিছু বলছি না। তবে বিষয়টি কমিশন বিচার করে দেখবে।”
প্রথম দফার ভোটের মনোনয়নপত্র জমার শুরু থেকেই বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়। ক্রমাগত সেই খবর এসেছে কমিশনের কাছে। বহু জায়গায় প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে কমিশন জানতে পেরেছে। কমিশন সূত্রের খবর, মনোনয়পত্র জমা দেওয়া এবং প্রত্যাহারের সময়সীমার মধ্যে কমিশনের কাছে ৫০০টিরও বেশি অভিযোগ এসেছে। ফলে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেন প্রার্থীরা জিতলেন, তার সঙ্গে কমিশনে জমা পড়া অভিযোগের সম্পর্কও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে জেলা পঞ্চায়েত নির্বাচনী অফিসার তথা জেলাশাসকদের।
|