|
|
|
|
তারাবাজি |
সব আশ্বাসই ভুয়ো নয়
মনের জানলা বন্ধ রাখলে নাট্যসম্পর্কের বন্ধ্যত্বই অনিবার্য। বক্তা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং
প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু। আনন্দplus বিগত তিনটি সংস্করণে ‘রাজা লিয়র’ নিয়ে বাদানুবাদ তুঙ্গে।
এই সংস্করণেই কি অবশেষে সব বিতর্কের অবসান? |
প্রতি
বিভাগীয় সম্পাদক
আনন্দplus,
আনন্দবাজার পত্রিকা
কলকাতা
মহাশয়,
আপনার বিভাগে শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লিয়র নিয়ে মিনার্ভার আশ্বাস ভুয়ো’ পত্রটি পড়লাম। সৌমিত্রবাবু বাংলা মঞ্চ ও ছায়াছবির জগতের এক কিংবদন্তী শিল্পী। দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করছেন, বয়সও হয়েছে তাঁর। অনেকে বলেন বয়সজনিত আবেগ মানুষকে তো যুক্তি থেকে অনেক দূর সরিয়ে নিয়ে যায়। এই লেখাটিতে তারই যেন প্রতিফলন দেখলাম।
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন, “কিন্তু একটা সমস্যা হল মিনাভার্য় বসার আসন এত কম, যে পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ শো হলেও নাটক ঠিক লাভের মুখ দেখে উঠতে পারছিল না।” এখানেই তো গোড়ায় গলদ। মিনার্ভা রেপার্টরি তৈরির আগেই তো মিনার্ভা থিয়েটার হলটি নতুন করে তৈরি হয়েছিল। ফলে তৎকালীন উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিনার্ভাতে ‘রাজা লিয়র’ মঞ্চস্থ করাটাই ভুল ছিল। মাত্র ২৬৬টি কার্যকরী আসনের অডিটোরিয়ামের ‘রাজা লিয়র’-এর মতো একটি ব্যয়বহুল প্রযোজনা শুধু অর্থকরী ক্ষতির মুখই দেখেনি, অসংখ্য নাট্যানুরাগীকে এই প্রযোজনাটি থেকে বঞ্চিত করেছিল। কাকে জনপ্রিয় করার কথা ভেবেছিলেন তৎকালীন কর্তৃপক্ষ? ‘মিনার্ভা থিয়েটার হল’ না ‘মিনার্ভা রেপার্টরি থিয়েটার’? ফলত: দিশাহীন ‘রাজা লিয়র’ আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতি নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আর সাত মাস ধরে এটা চলার পর তাঁরা বুঝতে পারলেন মিনার্ভা অলাভজনক? ‘গোড়ায় গলদ’ থেকে ‘শেষ রক্ষা’ করতে তো সময় লাগেই! অগস্টে নতুন সরকারের নতুন কমিটির প্রথম মিটিংয়েই আমি সভাপতি হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যত দ্রুত সম্ভব ‘রাজা লিয়র’-কে ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু মিনার্ভার ছোট্ট ঘেরাটোপের মধ্যে নয়, অন্য বড় সরকারি হলে। এবং এটিকে লাভজনক করতেই হবে। উপদেষ্টা পরিষদের সভ্যরা নির্দেশকের সঙ্গে বসে আমার ভাবনার বাস্তবায়ন করেন এবং অর্থকরী সাফল্যের সঙ্গে ‘রাজা লিয়র’ মঞ্চস্থ হতে শুরু করে। আমি জানি ‘রাজা লিয়র’ করতে প্রচণ্ড শারীরিক সক্ষমতা লাগে। সেই শারীরিক সক্ষমতার অভ্যেস থেকে বঞ্চিত হলে অভিনয় করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এটাও জানি, সরকারি অর্থের অপচয়ের অভ্যেস থেকে না বেরোলে নিয়মিত ভাবে ভাল থিয়েটার দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ে।
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন ‘রাজা লিয়র’-এর যে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করার কথা হয়েছিল, দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পরেও তা বন্ধ হয়ে যায়। সৌমিত্রবাবুর কাছে পুরো তথ্য থাকলে তিনি জানতে পারতেন, এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল ২০১১-র ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন এই সরকার ক্ষমতাতেই আসেনি এবং তৎকালীন সরকার বিষয়টি সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। এটি কোনও মামুলি ভিডিয়ো রেকর্ডিং ছিল না। একটি বাণিজ্যিক সংস্থা ‘রাজা লিয়র’-এর ডিজিটাল হোম ভিডিয়ো ও টেলিভিশন রাইটস কিনতে চেয়েছিলেন। মনের জানলা বন্ধ না করে খুলে রাখলে সৌমিত্রবাবু দেখতে পেতেন যে বন্ধুরা তাঁকে এই ‘বন্ধ’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত করিয়েছেন, তাতে নাট্যসম্পকের্র বন্ধ্যাত্বই ঘটায়। ফসল ফলে না।
|
‘রাজা লিয়র’ নাটকের একটি দৃশ্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। |
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন: ‘সেই সময় শোনা গিয়েছিল নতুন নাটককে জায়গা দেওয়ার জন্যই ‘রাজা লিয়র’-এর শো বন্ধ করতে হয়েছিল মিনার্ভা রেপার্টরি থিয়েটারকে।’ এই নতুন নাটকটির নাম ‘দেবী সর্পমস্তা’। সৌমিত্রবাবুর জ্ঞাতার্থে জানাই, জায়গা করে দিতে হয়নি এই নাটকটিকে। বরং প্রথম অভিনয় থেকেই বাংলার নাট্যানুরাগী দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে প্রযোজনাটি। বাইরে থেকে আনা কোনও জনপ্রিয় অভিনেতা নয়, ‘রাজা লিয়র’-এর প্রায় এক চতুথার্ংশ অর্থে নির্মিত এই প্রযোজনাটি মিনার্ভার ঐ ২৬৬ আসনের অডিটোরিয়ামেই নিয়মিত হাউসফুল হয়েছে, লাভের মুখ দেখেছে। এবং জনপ্রিয়তায় ‘দেবী সর্পমস্তা’ ‘রাজা লিয়র’-এর থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে ছিল না। বরং এগিয়েই ছিল। কারণ এটি শুধুমাত্র রেপার্টরির অভিনেতাদের নিয়ে প্রযোজনার জোরে জনপ্রিয় হয়েছে। কোনও কিংবদন্তী অভিনেতার জনপ্রিয়তাকে মূলধন করেনি দেবী সর্পমস্তা। ফলে দেবী সর্পমস্তার সঙ্গে রাজা লিয়রের সংঘাত ঘটার প্রশ্নই ওঠে না। ‘দেবী সর্পমস্তা’-র নিজস্ব অভিনয় কখনও মিনার্ভার বাইরে হয়নি। অন্য দিকে ‘রাজা লিয়র’-কে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তাকে মিনার্ভার বাইরে যেতে হয়েছিল। আবেগ, অভিমান আর ভ্রান্তির সঙ্গে কি অসূয়াও মিশে থাকে? কে জানে!
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন: ‘কাগজে ‘রাজা লিয়র’ নাটকের বিজ্ঞাপন প্রচারও বন্ধ করে দেওয়া হল। কোনও বড় কাগজে অন্তত ‘রাজা লিয়র’-এর বিজ্ঞাপন ছাপা হয়নি বেশ কিছু দিন।’ এর আগেই তিনি লিখেছেন, “সব সময় শেষ লেখা পড়া হয়ে ওঠে না নানা ব্যস্ততায়।” এই ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি যে বড় কাগজে ‘রাজা লিয়র’-এর মাত্র দু’টি শো-এর বিজ্ঞাপন না বেরোনোকে খেয়াল করেছেন এবং মনে রেখেছেন, সে জন্য তাঁকে ধন্যবাদ! কিন্তু তিনি যদি আরও একটু খুঁটিয়ে দেখতেন, ব্যস্ততার মধ্যে আরও একটু সময় বের করতেন, তা হলে দেখতে পেতেন শুধু ‘রাজা লিয়র’ নয়, ‘দেবী সর্পমস্তা’-র বিজ্ঞাপনও সেই সময় বড় কাগজে বেরোয়নি। তা হলে শুধু ‘রাজা লিয়র’-এর নামই বারবার উঠে আসছে কেন? তা হলে কি জনপ্রিয়তাকেও মাঝে মাঝে বিতর্কের আগুনে সেঁকে নিতে হয়? না হল মিইয়ে যায়?
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন, “এর পর একটা সময় দেখলাম আমার কাছ থেকে নাটকের ডেট নেওয়ার পর বিনা নোটিশে শো বাতিল হয়ে যেত।’ ‘রাজা লিয়র’-এর মূল অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রায় সকলেই রেপার্টরির ‘অতিথি শিল্পী’। ফলে শুধু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নন, ডেট নিতে হত আরও অনেকের। কখনও কখনও অতিথি শিল্পীদেরও পরিবর্তন হয়েছে অভিনয়ের স্বার্থে অত্যন্ত ব্যয়বহুল রিহার্সালের মাধ্যমে (যেমন ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২-র রিহার্সাল খরচ ৫১,৫৮৯ টাকা)। কিন্তু নাটক থেমে থাকেনি। ঘোষণা করেও দুটি শো বাতিল হয়েছিল ২০১১-র ২৩ ও ২৪ এপ্রিল, ই.জেড.সি.সি-তে। মে বোধহয় এপ্রিলের পরেই আসে। আর ২০১২-র ২৩ নভেম্বর শোটি করা যায়নি সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অসুস্থতার কারণে। সেই সময় পরপর দু’দিন অভিনয় করার মতো শারীরিক সুস্থতা ছিল না তাঁর। ২০১৩-র ফেব্রুয়ারির শো-টি নিজস্ব অভিনয় ছিল না। এটা ছিল আমন্ত্রিত অভিনয়। আর আমন্ত্রিত অভিনয়ের অনুমতি মিনার্ভা কর্তৃপক্ষ দেয় না। এটি আসে তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তর থেকে। এই অভিনয়টিতে সেই অনুমতি পাওয়া যায়নি। তা হলে ‘বাতিল’ শব্দটি কেন? মনস্তত্ব বলে, এক মিথ্যে বারবার আউড়ে গেলে অবচেতনে সেটা সত্য হিসেবে প্রতিভাত হয়, এক নবতম ‘বোধ’ জন্ম দেয়। এ রকমই কি কিছু হল তা হলে? |
বিস্তারিত জানতে নীচের ছবিগুলিতে ক্লিক করুন.... |
|
|
|
|
|
সৌমিত্রবাবু লিখেছেন, “এও জানালাম যে মিনার্ভা রেপার্টরির ছেলেমেয়েদের পুনরায় নিযুক্ত করা হবে পরীক্ষা নিয়ে।” আবারও বিস্ময়! মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চচার্কেন্দ্র ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন-‘শুরু হল পথচলা’। এই পুস্তিকার একজন অন্যতম লেখক শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এই পুস্তিকার ৯ নম্বর পাতায় শ্রী কুমার রায় লিখেছেন, ‘কর্মসূচী(গ): মিনার্ভা থিয়েটার কেন্দ্রিক একটি রেপার্টরি থিয়েটার গড়ে তোলা এবং নাটপ্রশিক্ষণকেন্দ্রও চালু রাখতে হবে। এই রেপার্টরির স্থায়িত্ব প্রতিবার দুই বা তিন বছর। এর নিয়মাবলী করবে সোসাইটি।’ ৩০ নম্বর পাতায় রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত লিখেছেন, “রেপার্টরি অন্তত বছর দু’য়েক চলবে।” এবং ২০১০-এ যখন রেপার্টরি গঠিত হয়, তখন নিয়োগ পত্রেই প্রতি বছর পুননর্বীকরণের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তিন বছরের মেয়াদের কথা তৎকালীন কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে দেন। এই সব নিয়ম-কানুন তো তৈরি তৈরি হয়েছিল বিগত সরকারের আমলেই। রেপার্টরি পুনর্গঠিত হলে চলতি প্রযোজনার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট রূপরেখা রেপার্টরি গঠনের সময় ছিল না। পুরনো প্রযোজনাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত এ রকমটাই নিশ্চয়ই ভেবেছিলেন তৎকালীন কর্তৃপক্ষ। তা না হলে
কেন এই তিন বছরের মেয়াদ? আর এ সবই তো সৌমিত্রবাবুর অনেক দিন আগেই জানা। আবার নতুন করে জানতে হল কেন?
সুতরাং পূর্বে ‘জানা’ কোনও কথা যদি পরবর্তীতে হঠাৎই ‘অজানা’ হয়ে ওঠে তখন এটি তাঁর ‘স্মৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’-ই ভাবা থাক।
সৌমিত্রবাবু লিছেছেন, ‘নতুন যাঁরা আসবেন, তাঁদের সঙ্গে নতুন ভাবে মহড়া দিয়ে নতুন ভাবে প্রোডাকশন নামাতে হবে, এটা তো একটা অবাস্তব অবস্থা। তার জন্য কি আমার সময় হবে নাকি?’
‘রাজা লিয়র’য়ের মূল অভিনেতা-অভিনেত্রীরাই বাইরে থেকে আসেন। রেপার্টরির যে গুটিকয়েক অভিনেতারা সংলাপ বলতেন, আশা করি নির্দেশক তাদের তৈরির ভার নেবেন। মন থেকে চাইলে সব অবাস্তবই তো বাস্তব হয় মানুষের জীবনে। যে ভাবে সৌমিত্রবাবু তাঁর ব্যস্ততার মধ্যে থেকে সময় বার করে এই পত্র লিখেছেন, সেই রকমই কিন্তু সময় থিয়েটারকে দিলেই মিনার্ভা রেপার্টরি ধন্য হবে। কারণ নবগঠিত মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র সব সময়ই তাঁকে সম্মান জানিয়েছে। বিগত সরকারের আমলে ‘রাজা লিয়র’য়ে অভিনয়ের জন্য তাঁর সম্মানদক্ষিণা ছিল চার হাজার টাকা। নতুন সরকার আসার পর নবগঠিত কমিটির প্রথম মিটিংয়েই আমার অনুরোধে সেটিকে বাড়িয়ে প্রতি অভিনয় পিছু ছয় হাজার টাকা করা হয়। এর পর ওঁর চিঠিতে উল্লেখিত মিনার্ভা রেপার্টরির সেই ‘একজন কর্মচারী’কে তিনি অর্থমূল্য বাড়াতে বলেন। আমরা ছয় হাজার থেকে দশ হাজার টাকা করি। এর পর ঐ কর্মচারীকে তিনি আমন্ত্রিত অভিনয়ের জন্য অর্থমূল্য দ্বিগুণ করতে বলেন। আমরা দশ হাজার থেকে কুড়ি হাজার। মুম্বইয়ে ‘রাজা লিয়র’য়ের আমন্ত্রিত অভিনয়ের জন্য উনি পঞ্চাশ হাজার টাকা চান, সেটিরও নির্দ্বিধায় অনুমতি দেওয়া হয়। আশা করি, এই চাহিদা ও যোগান, কোনওটাই ‘ভুয়ো’ ছিল না, অন্তত কাগজপত্র তো তাই বলে। যদিও জানি অর্থই একমাত্র সম্মান জানানোর পথ নয় এবং এও জানি সম্মান কখনও একমুখী বিক্রিয়া নয়, উভমুখী। কোনও ঋনাত্বক অনুঘটক এই উভমুখী বিক্রিয়াকে একমুখী করে তুলুক আমি চাই না। একইসঙ্গে আশা
রাখি, কোনও না কোনওদিন নিশ্চয়ই তাঁর মনে হবে, রাজারা সব সময় কানে দেখেন না এবং সব আশ্বাসই ভুয়ো নয়।
|
ধন্যবাদান্তে
ব্রাত্য বসু
(সভাপতি মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র)
|
পুনশ্চ:
প্রিয় সৌমিত্রদা,
ওপরের চিঠিটি আমি লিখেছি মিনার্ভা রেপাটর্রির সভাপতি হিসেবে। অর্থাৎ প্রশাসক হিসেবে, আপনার অনুরাগী ব্রাত্য হিসেবে নয়। যদি এই চিঠি আপনাকে কোথাও আঘাত করে আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। শুধু আপনার মতো বরেণ্য অভিনেতার কাছে অনুরোধ, আমাদের আপনার খোলা চোখ নিয়ে দেখুন। যে বা যারা তাদের হতাশ, অক্ষম এবং বিকারগ্রস্ত আত্মা নিয়ে অকারণে এটাকে ইস্যু বানাতে চাইছে কেবলমাত্র ব্যক্তিগত মাইলেজের জন্য (অর্পিতা, দেবেশ, মণীশদের চিঠিতে রাখানের পালে বাঘ পড়ার ধারাবাহিক হুক্কারব তোলার উপমাটি স্মরণ করুন) তাদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে বাংলার অভিনয়ের ‘আইকন’কে দেখতে বাংলার রসিক সমাজের যে মোটেও মন চায় না! আমাদের সরকার, আমরা বারেবারেই আপনাকে সম্মান জানাতে চেয়েছি, চাইছি। আমাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সেই মতান্তর কখনই মনান্তর নয়। বিশেষত যেখানে শুধুমাত্র রাজনৈতিক মত ভিন্ন হওয়ার কারণে ‘আমরা-ওরা’ নামক শব্দবন্ধের দগদগে ঘা এখনও আমাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশ বহন করে চলেছে। কিন্তু এও মনে রাখতে হবে যে সমস্ত মতের উর্ধ্বে উঠে যোগ্যর উপাসক হওয়াই তো আমাদের কাম্য।
ঘোলা জলে নামা ফোটকে এমনকী ল্যাটা মাছ ধরতে চাওয়া কর্দমাক্ত জেলের দল বা মেষ পালকেরা সর্বতো ভাবেই পরিত্যজ্য!
প্রিয় সৌমিত্রদা, আমরা আছি। কর্ডেলিয়াদের চিনতে শিখুন। |
(এই প্রসঙ্গে পুনরায় আর কোনও চিঠি প্রকাশিত হবে না।) |
|
|
|
|
|