|
|
|
|
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ |
ই-মন্তব্যে গ্রেফতারিতে চাই
বড়কর্তার সম্মতি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
|
উচ্চপদস্থ কোনও পুলিশকর্তার অনুমতি চাই। নচেৎ ফেসবুক বা ওই ধরনের কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। উচ্চপদস্থ কর্তা বলতে কারা, তা ব্যাখ্যা করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে আইজি, ডেপুটি কমিশনার বা এসপি পদমর্যাদার কোনও অফিসারের অনুমতি আবশ্যিক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশটি ঘিরে সন্তোষ-অসন্তোষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে আইনজীবী ও মানবাধিকার সংগঠন মহলে।
সোশ্যাল সাইটে ই-মন্তব্যের জের যে কত দূর গড়াতে পারে, কলকাতা তার প্রত্যক্ষদর্শী। ২০১২-র ১২ এপ্রিল রাতে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্র ও তাঁর পড়শি সুব্রত সেনগুপ্তকে। অভিযোগ ছিল, ই-মেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়কে নিয়ে একটি ‘অবমাননাকর’ রঙ্গ-চিত্র তাঁরা ফরওয়ার্ড করেছেন। রাতভর ওঁদের থানায় আটকে রাখা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে শোরগোল পড়ে যায়, তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি। স্বতঃপ্রণোদিত তদন্তে নামে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। তারা পরে পূর্ব যাদবপুর থানার সংশ্লিষ্ট দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে রাজ্যের কাছে। অম্বিকেশবাবুদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়।
কোনওটাই অবশ্য রাজ্য সরকার মানেনি। তবে এ দিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশ শুনে আইনজীবী মহলের একাংশ আশাবাদী। তাঁদের বক্তব্য: অম্বিকেশবাবু-সুব্রতবাবুকে যে ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে, এই নির্দেশ তার পুনরাবৃত্তি রুখতে সহায়ক হবে। “এ বার গ্রেফতারের দায়িত্ব থাকবে পদস্থ পুলিশকর্তাদের উপরে। এতে পুলিশের দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। এমন ঘটনায় যথেচ্ছ ধরপাকড়ের প্রবণতায় রাশ পড়বে।” বলেন এক আইনজীবী।
মানবাধিকার-কর্মীদের একাংশ অবশ্য এতটা আশাবাদী নন। বরং কিছুটা আশাহতই। ওঁদের দাবি ছিল, এই ধরনের মামলায় গ্রেফতার একেবারেই নিষিদ্ধ হোক। তা না-হওয়ায় কার্যত অশনি সঙ্কেত দেখছেন ওঁরা। যেমন এপিডিআরের সম্পাদক ধীরাজ সেনগুপ্ত বলছেন, “পুলিশের পদস্থ কর্তাদের উপর সুপ্রিম কোর্ট আস্থা রাখলেও আমাদের নেই। প্রয়োজনে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা তো পুলিশকর্তাদেরও প্রভাবিত করতে পারেন!”
বস্তুত এই কারণেই ওঁরা চেয়েছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের যে ধারায় (৬৬এ) এ সব ক্ষেত্রে কাউকে গ্রেফতার করা হয়, সেটাই বাতিল করা হোক। সেই আর্জি অবশ্য এ দিন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম
কোর্টের বিচারপতি বিএস চৌহান ও বিচারপতি দীপক মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। অন্ধ্রের কংগ্রেস বিধায়ক আমাঞ্চি কৃষ্ণমোহন ও তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল কে রোসাইয়া সম্পর্কে ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগে হায়দরাবাদের মানবাধিকার-কর্মী জয়া বিন্ধ্যালয়াকে ৬৬এ ধারায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে ১২ মে। তার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
আর তারই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ। শুনে অম্বিকেশবাবুর কী প্রতিক্রিয়া?
অম্বিকেশবাবু বলেন, “নির্দেশটিকে স্বাগত জানাচ্ছি। সব রাজ্যেই যেন তা কার্যকর করা হয়। ৬৬এ ধারা নিয়ে বিতর্ক চলছে। আমি মনে করি, সেটারও দ্রুত সংশোধন দরকার।”
|
পুরনো খবর
• ব্যঙ্গ-মেল পাঠিয়ে হাজতে অধ্যাপক
• ফেসবুক কাণ্ডে দেশ ক্ষুব্ধ, মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
• ফেসবুকে মন্তব্য করে ফের আটক, কাঠগড়ায় আইনই
• শোকে বনধ কেন, মুখ খুলে গ্রেফতার তরুণী |
|
|
|
|
|