|
|
|
|
সিআইডি তদন্ত চাইছে পরিবার |
বছর ঘুরেও কিনারা হল না রহস্য-মৃত্যুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ঠিক এক বছর আগের ঘটনা। দিনটা ছিল শুক্রবার, মে মাসের ১১ তারিখ। ওই দিন দুপুরে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিল ছেলেটা। বিকেলে পরিবারের একজন তার ঘরে ঢুকে আঁতকে ওঠেন। দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে রক্তাক্ত দেহ। সারা দেহে আঘাতের চিহ্ণ। দুই হাতের শিরা কাটা। দেখতে দেখতে ঘটনার বছর ঘুরল। কিন্তু, অভিষেক নাগের খুনের কিনারা এখনও হল না। অভিষেক অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মেদিনীপুর শহরে আগেও বহু খুনের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে। তাদের সাজা হয়েছে। কিন্তু, ওই ছাত্র খুনের ঘটনায় এক বছরে একজনও ধরা পড়েনি। কেন? পুলিশের বক্তব্য, সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে পেলেই গ্রেফতার করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে তা মেলেনি। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীর কথায়, “ঘটনার তদন্ত চলছে।” |
|
অভিষেকের ছবি নিয়ে পরিজনেরা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
অভিষেকের পরিবার অবশ্য এখনও হাল ছাড়েনি। বাবা প্রবীর নাগের কথায়, “পুলিশের কাছে যখনই গিয়েছি, শুনেছি তথ্যপ্রমাণ নেই। তাই কাউকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। জানতেই পারলাম না, ছেলেটাকে কারা এ ভাবে খুন করল।” তাঁর কথায়, “বিচারের আশায় সিআইডি, মানবাধিকার কমিশনের কাছে গিয়েছি। শুধু আশ্বাসই মিলেছে।” প্রবীরবাবু মেদিনীপুর পুরসভার কর্মচারী। বাড়ি শহরের বরিশাল কলোনিতে। শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল ঘরের দেওয়ালে রাখা অভিষেকের ছবি। তাতে রজনীগন্ধার মালা। এক বছর আগের এক বিকেলে এই ঘরের বিছানা থেকে উদ্ধার হয়েছিল ওই ছাত্রের দেহ। সে কথা বলার ফাঁকেই দেওয়াল থেকে ছবিটা নামিয়ে নিজের হাতে নিলেন প্রবীরবাবু। পাশে তখন স্ত্রী, বৃদ্ধা মা, ভাই। মা ইরাবতীদেবীর প্রশ্ন, “পুলিশ দেখছি, দেখব বলে আর কত দিন কাটাবে? এক বছর সময়টা কী খুব কম?” ঘটনার পর গত ৯ জুলাই কলকাতার ভবানী ভবনে গিয়ে সিআইডি কর্তা বিনীত গোয়েলের সঙ্গে দেখা করে পরিজনেরা সিআইডি তদন্তের আর্জি জানান। তার প্রেক্ষিতে ৬ সদস্যের দল মেদিনীপুরে আসে। তবে শুরু হয়নি সিআইডি তদন্ত। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে চলতি বছরের ৭ মার্চ ফের সিআইডি কর্তার দ্বারস্থ হয় পরিবার। পাশাপাশি, মানবাধিকার কমিশনের কাছেও আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়। তারপরও তেমন কিছু হয়নি। বরিশাল কলোনির জনবহুল এলাকায় প্রবীরবাবুর বাড়ি। এমন বসতিপূর্ণ এলাকায় এসে কী ভাবে ঘরের মধ্যে ঢুকে অভিষেককে খুন করে দুষ্কৃতীরা পালাল তা এখনও অজানা। অথচ, তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয় অভিষেককে খুন করাই উদ্দেশ্য ছিল দষ্কৃতীদের। কাকা সুজয়বাবুর কথায়, “বিচারের আশায় সিআইডি-মানবাধিকার কমিশনেও গিয়েছি। কিন্তু খুনের কিনারা হল না।”
|
পুরনো খবর: নিজের ঘরেই স্কুলছাত্র খুন শহরে |
|
|
|
|
|