সরে গেল ‘চেয়ারম্যান সাব’ (মহম্মদ ইকবাল)-এর নেমপ্লেট। সেখানে বসল রঞ্জিত শীলের নাম। বৃহস্পতিবার ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জিত শীল আগামী এক বছরের জন্য ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। আর তা দেখে ইকবাল-ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের মুখ থেকে বেরিয়ে এল, “বেচারা মুন্নাভাই”। তবে মুন্নাভাইয়ের অনুগামীরা যাতে কোনও গোলমাল পাকাতে না পারে, তার জন্য নির্বাচনের ঘণ্টা চারেক আগে থেকেই বরো চত্বর ঘিরে রাখে পুলিশ। |
জেতার পরে বরো চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীল। —নিজস্ব চিত্র |
কলকাতা পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান পদে বসেছিলেন মুন্না। দু’মাস আগে গার্ডেনরিচে হরিমোহন ঘোষ কলেজের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধে। খুন হন পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরী। তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। ওই খুনের অভিযোগে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের ঘনিষ্ঠ বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মুন্নার গ্রেফতারের ঘটনায় ববিকেও কোণঠাসা করার চেষ্টা করে দলেরই একাংশ। ওই সুবাদে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর অনুগামী তথা ওই বরোর কাউন্সিলর সামসুজ্জমান আনসারির বৌমা রুবিনা নাজকে প্রার্থী করতে তোড়জোড় শুরু করেন। মেয়রের আর এক অনুগামী মইনুল হক চৌধুরীও ওই লড়াইয়ে নামেন। স্বভাবতই ওই বরোয় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী নিয়ে এর পরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। শেষমেশ পুরমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য হুইপ জারি করে দল।
ওই বরোয় মোট ৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে দু’জন সিপিএমের। বাকি সাত জনই তৃণমূলের। এ দিন নির্বাচনে সিপিএমের আমিন (ঝুন্নু) আনসারি যোগ দেন। সিপিএমের অন্য এক জন অনুপস্থিত ছিলেন। ৬-১ ভোটে নির্বাচিত হন রঞ্জিতবাবু। গার্ডেনরিচে গোলমালের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। ভোটের জেতার পরে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত ছিলাম না।”
বরো চেয়ারম্যান পদে রঞ্জিত শীলের যোগ্যতা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মইনুল হক চৌধুরী। এ দিন অবশ্য তিনি বলেন, “দল হুইপ দিয়েছে। তাই ভোট হল। মন থেকে মেনে নিতে পারিনি।” যদিও সিপিএমের ঝুন্নু আনসারির বক্তব্য, “হাত তুলে ভোট। না হলে হুইপ-এর জোর দেখে নিতাম।”
|