রাত পেরোলেও কাটল না কালবৈশাখীর প্রভাব। না রাস্তায়, না আবহাওয়ায়।
বুধবার রাতে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় কালবৈশাখী ছুঁয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আয়লাকে। আর তার দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল শহরের জনজীবন। কলকাতার একাধিক রাস্তায় গাছ ও বাতিস্তম্ভ উল্টে পড়ে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। আটকে যায় ট্রেন চলাচল। তার রেশ চলে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত থেকেই এলগিন রোড, ডি এল খান রোড, হেস্টিংস, টালা, বেলগাছিয়া প্রভৃতি এলাকায় উপড়ে পড়া গাছ সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে তড়িঘড়ি কাজ করে যান চলাচল চালু করে দেওয়া হলেও পুরো কাজ শেষ করা যায়নি। এ দিন বেলা পর্যন্ত সেই কাজ চলে। এসএসকেএম হাসপাতালে রেসপিরেটরি কেয়ার ইউনিটের সামনে একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে, যা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্তও সরানো হয়নি। ট্রামলাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় ব্যাহত হয় ট্রাম চলাচলও। সিটিসি সূত্রের খবর, ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হওয়ায় এ দিন দুপুরে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে সারিবদ্ধ ট্রাম দাঁড়িয়ে পড়েছিল। যার জেরে যানজটও হয় ওই এলাকায়। ঝড়ে ময়দান এলাকায় ট্রামের তার ছিঁড়ে পড়ে গেলে তা চুরিও হয়ে যায়। |
কালবৈশাখীর কোপে চিঁড়েচ্যাপ্টা ট্যাক্সি। বৃহস্পতিবার,
হরিশ মুখার্জি রোডে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক |
বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে পড়ায় ব্যাহত হয়েছে বাস চলাচলও। সিটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, “নানা অঞ্চলে বিশেষত ময়দানের বিভিন্ন অংশে গাছ পড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। রাতভর আমাদের কিছু কর্মী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন। তবে সব গাছ আমাদের পক্ষে কাটাও সম্ভব নয়। পুরসভাকে বলা হয়েছে।” পুরসভা সূত্রের খবর, গোটা কলকাতায় অন্তত ৭০-৮০টি গাছ কাটা হয়েছে।
শহরের আবহাওয়ায় এ দিনও ছিল কালবৈশাখীর ছোঁয়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় তিন ডিগ্রি কম। সাধারণত, গরমকালে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ২-৩ ডিগ্রি বেশি থাকাটাই দস্তুর। কিন্তু কালবৈশাখীর প্রভাবেই সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে বলে আবহবিদেরা জানান। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক আবহবিদ জানান, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে। রয়েছে জলীয় বাষ্পও। তার প্রভাবেই গোটা রাজ্যে কালবৈশাখীর পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে।
|