নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আর একটু হলেই উড়ে যাচ্ছিল পাখি।
বিমানে উঠে বসেছিলেন অন্য যাত্রীদের সঙ্গে। কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছতে দেরী হয়ে গিয়েছিল খড়্গপুর পুলিশের। কিন্তু, বিমানবন্দরে সিআইএসএফ’কে জানাতেই তৎপর হয় তারা। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসারেরা সটান উঠে পড়েন লখনউ-গামী ওই বিমানে। বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয় তাকে।
রেলে চাকরি দেওয়ার নামে এ রাজ্যে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল উত্তরপ্রদেশের এই যুবক মণিপ্রকাশ ত্রিপাঠি। ঘাঁটি গেঁড়েছিল রেলশহর খড়্গপুরে। বৃহস্পতিবার কলকাতা ছেড়ে লখনউ পালাচ্ছিল সে। তবে শেষরক্ষা হল না। প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত খড়্গপুর লোকাল থানার মাদপুরের বাসিন্দা মানিক ঘোষ ও খড়্গপুর শহরের ইন্দার বাসিন্দা দিগন্ত দাসকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা চক্র চালাত লখনউয়ের গোমতিনগরে বাসিন্দা মণিপ্রকাশ। গত বছর নভেম্বর নাগাদ সে এ রাজ্যে আসে। ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রেলে চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরি দেবে বলে বহু যুবকদের থেকে টাকা নিয়েছিল সে। অনেককে ভুয়ো নিয়োগপত্রও দিয়েছে। এমনকী ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল লিলুয়ার একটি নার্সিংহোম থেকে। উত্তরপ্রদেশে থাকাকালীন মণিপ্রকাশের কাছে প্রতারিত হয়েছিলেন মেরঠের দুষ্যন কুমার ও তাঁর বন্ধু আলিগড়ের বাসিন্দা সুমিত সিংহ। তাঁরা জানতে পারেন এখন খড়্গপুরে আছে মণিপ্রকাশ। সেই মতো খড়্গপুরে হাজির হন দুষ্যন ও সুমিত। খড়্গপুর লোকাল থানায় মণিপ্রকাশের বিরুদ্ধে ওই দু’জনই অভিযোগ দায়ের করেন। মণিপ্রকাশের দুই শাগরেদ মানিক ও দিগন্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বৃহস্পতিবার সকালের বিমানে লখনউ চলে যাচ্ছে মণিপ্রকাশ।
এ দিন সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে লখনউগামী ওই বিমান ছাড়ার কথা ছিল। তার আগেই সেখানে পৌঁছে যায় খড়্গপুর লোকাল থানার ওসি অভিজিৎ বিশ্বাসের নেতৃত্বাধীন পুলিশের দল। বিমান তখন ছাড়ার মুখে। সিআইএসএফ বিমান থেকে নামিয়ে আনে মণিপ্রকাশকে। এই চক্রে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। |