ফের কারাট-বুদ্ধ দ্বন্দ্ব
দায় কার, অন্তর্তদন্তে নেমে দ্বন্দ্ব সিপিএমে
লের ভাবমূর্তিতে যা কালি লাগার, লেগে গিয়েছে। কালিমা লেপনের দায় কাদের, তা নিয়ে এ বার প্রবল টানাপোড়েন শুরু হয়েছে সিপিএমে।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে শারীরিক নিগ্রহ দল যে অনুমোদন করছে না, মঙ্গলবার ঘটনার পরেই দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়ে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন আলিমুদ্দিনের শীর্ষ নেতারা। সিপিএমের পলিটব্যুরোও বুধবার একই কথা বলেছে। কিন্তু অবাঞ্ছিত ঘটনাটির দায় কার, সেই প্রশ্নেই নতুন করে সামনে চলে এসেছে প্রকাশ কারাটের সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুরনো দ্বন্দ্ব। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাংলার এসএফআই নেতারা, নাকি সিপিএমের দিল্লি রাজ্য কমিটির নেতারা কারা ছিলেন মঙ্গলবারের ঘটনার পিছনে, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
আলিমুদ্দিনের ক্ষোভ, এসএফআই-এর কর্মসূচিতে কেন জড়াতে গেলেন দিল্লির সিপিএম রাজ্য কমিটির নেতারা! দলীয় ময়না-তদন্ত বলছে, অমিতবাবুর উপরে হামলা করতে যাঁদের দেখা গিয়েছিল, তাঁদের যোজনা ভবনের সামনে জড়ো করে এনেছিলেন দিল্লি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক পুষ্পেন্দ্র গ্রেওয়াল। যিনি কারাটের ঘনিষ্ঠ বলেই দলীয় মহলে পরিচিত।
এ কে জি ভবনের আবার পাল্টা দাবি, বাংলার নেতারা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে দিল্লির সিপিএম নেতাদের ঘাড়ে বন্দুক রাখছেন। মঙ্গলবারের কর্মসূচি পুরোপুরি এসএফআই-এর নিজস্ব। ফলে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, শতরূপ ঘোষেরাই তার পুরোভাগে ছিলেন। ফলে তাঁরা মোটেই দায় এড়াতে পারেন না।
এ দিনই এ কে জি ভবনে ডেকে পাঠানো হয় পুষ্পেন্দ্রকে। নিজের অনুগামীদের উপরে কেন তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল না, সেই প্রশ্ন করা হলে পুষ্পেন্দ্র অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, পলিটব্যুরোর অবস্থানই তাঁর অবস্থান। এ কে জি-তে এ দিন বেশ কিছু সময় ছিলেন ঋতব্রতও। তিনিও মুখ খোলেননি।
স্বাভাবিক কারণেই দলের অন্দরের এই কোন্দল অবশ্য প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না পলিটব্যুরো। এসএফআই নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন কারাট নিজেই। ছাত্রনেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের দায়িত্বও দল নিতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, অমিতবাবুর উপরে হেনস্থার যে সব ছবি সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তাতে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত এবং যুগ্ম সম্পাদক শতরূপকে শুধু স্লোগান দিতেই দেখা গিয়েছে।
আসলে তৃণমূল, বৃহত্তর সমাজ এবং দলেরই একাংশের মধ্যে থেকে এসএফআই নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সংশয়, তরুণ মুখদের শাস্তি দিলে ভবিষ্যতে কর্মীরা রাস্তায় নামতেই চাইবেন না! দলের তরফে তাই ছাত্র-নেতাদের শাস্তির সম্ভাবনা উড়িয়েই দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ছাত্র সংগঠন দেখভালের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নীলোৎপল বসু বলেন, “এই প্রশ্নটাই ভিত্তিহীন!”
দায় নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই আরও একটি বিষয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছে সিপিএমে। ভবিষ্যতে মমতার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রকৃতি তবে কেমন হবে? দলের অনেকেই মনে করছেন, অমিতবাবুর হেনস্থা অনভিপ্রেত হলেও জঙ্গি আন্দোলনের প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না।
সিপিএমের কট্টরবাদী অংশের মত, মঙ্গলবারের ঘটনায় আলিমুদ্দিনের নেতাদের এত রক্ষণাত্মক অবস্থান নেওয়া উচিত হয়নি। এতে তাঁরা সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যুর প্রতিবাদ আন্দোলনটাকেই কার্যত ভোঁতা করে দিয়েছেন। দলের এই অংশটিকে বার্তা দিতেই পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে সুদীপ্তর মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি ফের তোলা হয়েছে। আবার আলিমুদ্দিন মনে করছে, দিল্লিতে এমন ঘটনা ঘটানো হল, যার মাসুল আখেরে দিতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের নেতা-কর্মী এবং দলীয় কার্যালয়গুলিকে।
বিবিধ টানাপোড়েনেই আটকে রয়েছে সিপিএম!

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.