তিন মিলিমিটারের একটা ছোট্ট চিপ। তা-ই নাকি আলোর জোগান দিচ্ছে অন্ধকার দুনিয়ায়। এমনই দাবি করছেন, জার্মানির গবেষকরা। রেটিনিস পিগমেন্টোসায় আক্রান্ত ন’জনের চোখে মাইক্রোচিপটি বসিয়ে, তাঁদের হারিয়ে যাওয়া দৃষ্টির অনেকটাই ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই গবেষকরা।
রেটিনিস পিগমেন্টোসা বংশগত রোগ। এতে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। নির্দিষ্ট করে বললে, চোখের ম্যাকুলার স্তর, যেখানে থাকা ফোটোরিসেপটরটি প্রতিচ্ছবি তৈরি করে, সেই অংশটাই ক্রমে খারাপ হয়ে যায়। গবেষকরা বলছেন, রোগটি সারানো অসম্ভব। কিন্তু রোগীর চোখে রেটিনার স্নায়ুকোষ একটা বিন্দুতে সক্রিয় থাকে। বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য ছিল, ওই স্নায়ুকোষটাকেই কোনও ভাবে কাজে লাগানো।
সেই উদ্দেশ্য নিয়েই গবেষণা শুরু করেন জার্মানির তুবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা ছোট্ট একটা চিপ তৈরি করে ওই রোগে আক্রান্ত কয়েক জনের চোখে বসান। ১৫০০ পিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন চিপটির নিজের ইলেকট্রোড রয়েছে। চোখে আলো পরলে এই ইলেকট্রোডটি রেটিনার স্নায়ুকোষকে উদ্দীপিত করে। এতে চোখের সামনে কতগুলো রঙিন আলোর রেখা তৈরি হয়। চিপটির নিজস্ব অ্যাম্পলিফায়ারও আছে, যা যে কোনও ছবিকে ছোট-বড় করে দেখাতে পারে। ‘প্রোসেসিং বি’ পত্রিকায় গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
হিউম্যান ট্রায়ালের ফলাফল দেখে চমকে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এত দিন পর্যন্ত এ ধরনের গবেষণায় আলোর আভাস ছাড়া খুব একটা সাফল্য মেলেনি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চিপ বসানোর পর রোগীরা মুখের অভিব্যক্তিও বুঝতে পারছেন। রাস্তা পারাপারের সময় চিনতে পারছেন লাল-সবুজ সিগনাল। এ ছাড়াও, ছোটখাটো জিনিস, যেমন বিভিন্ন ফলও চিনতে পারছেন রোগীরা। গবেষক এবারহার্ট জ্রেনারের কথায়, “যা আশা করেছিলাম, তার থেকেও অনেক বেশি সাফল্য পেয়েছি।” |