বনধ মোকাবিলার সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবারই দফায় দফায় বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে বৈঠক করে পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করে ফেলা হয়। বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে চিকিৎসক-নার্সদের সকাল-সকাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু যাঁদের জন্য এই আয়োজন, তাঁদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক ভাবে কম। জরুরি অস্ত্রোপচার হলেও পরিকল্পিত অস্ত্রোপচারের অন্তত ২০ শতাংশ বাতিল হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সুপার পার্থ প্রধান জানিয়েছেন, এ দিন ছোট-বড় মিলিয়ে তাঁদের ১৫২টি অস্ত্রোপচার হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার মুক্তিসাধন মাইতি জানান, তাঁদের আউটডোরে এ দিন প্রায় ১৫০০ জন রোগী এসেছেন।
ওই হাসপাতালের নথি অবশ্য বলছে, প্রতিদিন যেখানে প্রায় ২৫০০ রোগী আউটডোরে কার্ড করান সেখানে বুধবার এসেছেন মাত্র ৮৫০ জন। স্ত্রীরোগ বিভাগে দেখাতে এসেছেন মাত্র ১০ জন গর্ভবতী। অন্য দিন সংখ্যাটা ৫০ ছাড়িয়ে যায়। এসএসকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র জানিয়েছেন, তাঁদের হাসপাতালের চেহারা এ দিন ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বাতিল হয়নি কোনও পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার। স্বাভাবিক ছিল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে কাজকর্মও। আরজিকরের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগীর দাবি, অন্য দিনের সঙ্গে এ দিনের কোনও পার্থক্য খুঁজে পাননি তাঁরা।
এমনকী এ দিন কয়েকটি প্রকল্পের টেন্ডার খোলার কথা ছিল। সেখানেও সময় মতো হাজির হয়েছেন সকলে। এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে হাজিরার হার ছিল ৯৫ শতাংশ। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বাইরে থেকে যাঁরা স্বাস্থ্য ভবনে আসেন, তাঁদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো কম। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য এ দিন একবারও স্বাস্থ্য ভবনে যাননি। আগামী শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য ভবনে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করবেন। এ দিন দিনভর চলেছে তারই প্রস্তুতি। সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার পাশাপাশি জেলার মেডিক্যাল কলেজের কর্তারাও সকাল-সকালই সেখানে পৌঁছে যান। |