জখম হয়েছেন ৭ জন ধৃত ১৯ বন্ধ সমর্থক
ধর্মঘটে ফালাকাটায় গোলমাল
ত্তরবঙ্গের ৪ জেলায় কোনও গোলমাল না-হলেও বুধবার ধর্মঘটের দিন রক্ত ঝরল ডুয়ার্সের ফালাকাটায়। বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সহরই মোড়ে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুয়ার্সের ফালাকাটার দেওগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি স্কুল ও লাগোয়া অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র খোলা ছিল। তা বন্ধ করার চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়ান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-ঢিল নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধলে অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের শিশুরা ছুটে পালায়। ইটের ঘায়ে ৩ জনের মাথা ফেটে যায়। জখম হন আরও ৪ জন। পুলিশ জানায়, রফিকুল ইসলাম নামে এক আহত ব্যক্তিকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ব্যক্তি তাঁদের সমর্থক বলে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের দাবি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৯ জন ধর্মঘট সমর্থককে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে।
রায়গঞ্জের সহরই মোড়ে চলন্ত বাসে ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি অনুজ শর্মা বলেন, “যেখানে ধর্মঘট করার চেষ্টা হয়, সেখানে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। রায়গঞ্জ, ফালাকাটা সহ গোটা উত্তরবঙ্গে গোলমাল, বিশৃঙ্খলার চেষ্টার অভিযোগ এসেছে। সব ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে।” ধর্মঘটে কোচবিহার ও মালদহে বাস চলেছে। শিলিগুড়িতে সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাস দেখা যায়নি। তবে হিলকার্ট রোডে কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “সরকারি দফতরগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল ৯০ শতাংশ।” অবশ্য কোচবিহারে এসইউসিআই ও তৃণমূল সমর্থকদের মিছিল মুখোমুখি হলে সাময়িক উত্তেজনা হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বেসরকারি বাস চলেছে। কিছু বড় দোকান বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ ছোট দোকান এবং শহরের প্রধান সব্জি ও মাছের বাজার খোলা ছিল। জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী জানান, সরকারি দফতরে উপস্থিতির হার ৯২ শতাংশ। হলদিবাড়িতে পুলিশের সাহায্যে দফতরে যান পুর কর্তারা।
এদিন সকালেই শিলিগুড়ির চম্পাসারি এলাকা থেকে ৫ জন বনধ সমর্থনকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতেরা ওই এলাকায় জোর করে কয়েকটি দোকান বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি। এ ছাড়া দেশবন্ধুপাড়ার একটি স্কুলের সামনে ধমর্ঘটের সমর্থনে নকশালপন্থী শ্রমিক সংগঠনের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থক একদল যুবকের বিরুদ্ধে। তবে এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ হয়নি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকালে বন্ধ সমর্থনকারী ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” বাগডোগরা বিমানবন্দর, এনজেপি ও জংশন রেল স্টেশনে ট্রেন ও বিমান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও গাড়ি, অটো, রিকশা কম থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। ধর্মঘটের শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরের কর্মীদের একাংশ কাজে যোগ দিতে গেলে তাদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিটু পরিচালিত কর্মী ইউনিয়নের নামে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পর কর্মীরা কাজে যোগ দেয়।
স্কুল পরিদর্শকের অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মঘটে শিলিগুড়ি মহকুমায় শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির, অমিয় পাল চৌধুরী স্কুল, বেলগাড়ি হিন্দি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা সময়ে না পৌঁছলে স্কুল খোলা নিয়ে সমস্যা হয়। উপনিবার্চনের জন্য মালদহে ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। তার পরেও জেলার সমস্ত বাজার, দোকানপাট বন্ধ ছিল। বেশির ভাগ স্কুল, কলেজ বন্ধ ছিল। জেলার পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “জোর করে ধর্মঘট সফল করার চেষ্টার অভিযোগে রায়গঞ্জ থেকে ৯ ও ইসলামপুর থেকে ১৪ জন বনধ সমর্থনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” সিটু নিয়ন্ত্রিত সেন্টার অব ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সাধারণ সম্পাদক সমন পাঠকের দাবি, “দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রথম দিনের ধর্মঘটে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.