‘সম্মানহানি’র কারণ দর্শানোর চিঠি মন্ত্রীকে
নির্বাচনী প্রচারে ‘খেউড়-সংস্কৃতি’র বিরাম নেই।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্থানীয় এক স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রী তথা ইনটাক-এর জেলা সভানেত্রীকে ‘যৌনকর্মী’ বলে কটাক্ষ করতেও কসুর করেননি রেজিনগর বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই সে ব্যাপারে উকিলের চিঠি পেয়ে অস্বস্তিতে পড়লেন হুমায়ুন। বিব্রত জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলির কথাতেই তা স্পষ্ট। বিশেষ কথা না বাড়িয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, “আইন আইনের পথে চলবে।”
বুধবার তৃণমূল প্রার্থীকে চিঠি দিয়ে এলাকার পরিচিত কংগ্রেস কর্মী বেলডাঙা-২ ব্লকের কাটাইকোনা গ্রামের স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রী মেহেরুন্নেসা খাতুন তাঁর ‘সম্মানহানি’র কারণ দর্শাতে সাত দিন সময় দিয়েছেন। তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সূত্রটি কী? এ ব্যাপারে সাত দিনের মধ্যে উত্তর না পেলে আদালতে ফৌজদারী মামলা করা হবে বলেও ওই চিঠিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
মেহেরুন্নেসা বলেন, “রাজনীতিতে সস্তা হাততালি কুড়োতে যা মুখে এল তাই বলে দিলাম, এমনটা কি হয়! তৃণমূল প্রার্থীর ওই মন্তব্যে সমাজে আমার কি অবস্থা হল, সে কথা কি উনি ভেবে দেখেছেন। এ জন্য ওঁর কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।”
হুমায়ুনের ওই মন্তব্যের জেরে বেজায় চটে আছেন কাটাইকোনা গ্রামের মহিলারাও। দলমত নির্বিশেষে তাঁরা বলছেন, ‘মুখে এল আর বলে দিলাম!’ এই ধরণের মন্তব্যে সমাজে কী ধরণের সম্মানহানি হয়, তা এক জন জনপ্রতিনিধির জানা নেই? প্রশ্ন, কাটাইকোনা গ্রামের কাজলি বিবি, সুন্দরী বিবিদের। তাঁরা বলেন, “এক জন মহিলাকে এই ধরণের কথা বললে তাঁকে লজ্জা দেওয়া হয়, তা কি তিনি বোঝেন না? ওঁর বাড়িতেও তো মেয়ে-বউ রয়েছে!”
হুমায়ুন অবশ্য মচকাচ্ছেন না। ওই মন্তব্যে কোনও ভুল খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “উকিলের চিঠি এখনও হাতে পাইনি। তবে আমি যা বলেছি তা প্রমাণ দেওয়ার সমস্ত রসদই আমার হাতে আছে। প্রয়োজন মত তা আদালতে পেশ করব।”
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, মূলত ‘রাজনৈতিক হতাশা’ থেকেই এই ধরণের মন্তব্য করছেন কর্মীরা। কিন্তু তা বলে যৌনকর্মী? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত ব্যক্তিগত রোষ থেকেই হুমায়ুন ওই মন্তব্য করেছেন।
দিন কয়েক আগে কাটাইকোনা গ্রামে প্রচারে গিয়েছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। সেই সময়ে তাঁর হাতে ওই এলাকার সাতটি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা একটি অভিযোগপত্র তুলে দেন। তাতে জানানো হয়, সুলভে ব্যাঙ্ক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে প্রতিটি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর কাছে ৫০ হাজার টাকা করে ‘ঘুষ’ চেয়েছিলেন হুমায়ুন ও তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির অস্থায়ী কর্মী ডালিম শেখ। নিরুপায় হয়ে সে টাকা তাঁরা ডালিমের হাতে তুলেও দিয়েছেন বলে দাবি করেন মেহেরুন্নেসা। লিখিত অভিযোগ করা হয় স্থানীয় বেলডাঙা-২ বিডিও-র কাছেও।
এ প্রসঙ্গে হুমায়ুনের সাফাই ছিল, ঋণের ব্যাপারে ব্যাঙ্কের কাছে সুপারিশ করলেও ঘুষ নেননি তিনি। তিনি বলেন, “ঋণ সংক্রান্ত ব্যাপার এই এলাকায় আমার হয়ে দেখভাল করে ডালিম। ভোটের আগে মিথ্যা ঘুষের অপবাদ দিয়ে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।” ডালিম শেখও ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
এ দিন অবশ্য উকিলের ওই চিঠি পাওয়ার পরে মুখ লুকোচ্ছেন ডালিম শেখ। নির্বাচনের মুখে দলের মত তিনিও কি ঈষৎ বিড়ম্বিত, না কি ভয় পেয়ে গিয়েছেন!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.