|
|
|
|
গাছ কাটার অনুমোদনে দেরি, ঘুষের অভিযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
গাছ কাটার অনুমোদনের বদলে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল বন দফতরের এগরা রেঞ্জ অফিসার অরবিন্দ রায়ের বিরুদ্ধে। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পালের কাছে, এই অভিযোগ করেন পটাশপুর ১ বিডিও বুলবুল বাগচি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরবিন্দবাবু।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পটাশপুর বাঙ্গুচক মোড় থেকে কনকপুর পর্যন্ত পটাশপুর-বালিচক রাস্তার সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর। বছর দশেক আগে ওই রাস্তার দু’পাশে বন সৃজনের জন্য গাছ লাগিয়েছিল পটাশপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি। পূর্ত দফতর থেকে ব্লক প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, রাস্তা সম্প্রসারণ করতে গেলে বন সৃজনের ওই ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি গাছগুলি কেটে ফেলতে হবে। পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শক্তিপদ সাউ জানান, “প্রশাসনের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথা বলার পর গত বছরের ৭ নভেম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতিতে গাছ কাটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দরপত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরকে জানানো হয়। চাওয়া হয় অনুমোদনও।” আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রায় আড়াই হাজার গাছ বিক্রির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। বিডিও বলেন, “বন দফতেরর ওই আধিকারিক কয়েকবার এসে তদন্তও করে গিয়েছেন। কিন্তু, নানা অজুহাতে অনুমোদন দিচ্ছেন না। গাছ কাটার দরপত্র না দেওয়ায় রাস্তার কাজও আটকে গিয়েছে। এদিকে, গাছগুলি চুরিও হয়ে যাচ্ছে। গাছ বিক্রি করে পাওয়া টাকায় পঞ্চায়েত সমিতি উন্নয়নও করতে পারবে।” তাঁর অভিযোগ, “ওই আধিকারিক পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ও ব্লকের এক কর্মীর কাছে ব্যক্তিগত ভাবে টাকা চেয়েছেন। কিন্তু, তাঁরা দিতে না চাওয়ায় বিভিন্ন নথি চাওয়ার নাম করে বারবার দফতরে ডেকে পাঠিয়েও ফেরত পাঠাচ্ছেন। ফলে বাধা পাচ্ছে উন্নয়ননূলক কাজ।”
পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শক্তিপদবাবু ও কর্মী লক্ষ্মীন্দর শীট বলেন, “আমরা দফতরে বারবার গিয়েছি। কিন্তু টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় উনি প্রতিবারই নানা বাহানায় আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।” অভিযোগ, বিডিও এবং এগরার মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস এ ব্যাপারে ওই আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার কথা বললেও লাভ হয়নি। মহকুমাশাসক বলেন, “ওই আধিকারিক গাছ কাটার অনুমোদন না দেওয়ায় রাস্তার কাজ আটকে গিয়েছে। বিষয়টি জেলাশাসক ও জেলা বনাধিকারিককে জানানো হচ্ছে। উনি অনুমোদন দেওয়ার বিনিময়ে টাকা চেয়ে থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বন দফতর।”
অভিযুক্ত অরবিন্দবাবু বলেন, “নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে, আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। উল্টে কর্মক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনুমোদন চাইছেন। তা তিনি দিতে চান না। তাঁর কথায়, “নিয়ম অনুয়ায়ী ওই গাছ কাটতে হলে দু’লক্ষাধিক টাকার ব্যাঙ্ক চালান আমাদের কাছে দু’বছরের জন্য জমা রাখতে হয়। তাঁরা তা দিতে চাইছেন না। একটি গাছ কাটলে পাঁচটি গাছ লাগানোর প্রকল্পও তাঁরা জমা দিতে নারাজ।” |
|
|
|
|
|