|
|
|
|
কর্মনাশা বনধ প্রত্যাখ্যানের সাহসী প্রচেষ্টা জঙ্গলমহলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
কর্মনাশা ধর্মঘট প্রত্যাখ্যানের সাহসী প্রচেষ্টা দেখাল জঙ্গলমহল।
বুধবার বেসরকারি বাস-ট্রেকার পথে না নামলেও, বেশ কয়েকটি এলাকায় দোকানপাট খোলা রেখে রাজ্য সরকারের বনধ ব্যর্থ করার আহ্বানকে কার্যত সমর্থন জানালেন এলাকাবাসী। ঝাড়গ্রামে পুলিশি প্রহরায় দূরপাল্লার একাধিক সরকারি বাস চলেছে। পথেঘাটে লোকজনের আনাগোনা ছিল। মাওবাদীদের মদতপুষ্ট জনগণের কমিটির চাপে এক সময়ে বনধ সংস্কৃতির কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠেছিল লালগড়। বুধবার সেই লালগড়েই দোকানপাট খোলা ছিল। এ দিন লালগড়ে সাপ্তাহিক হাটও বসেছিল যথারীতি।
এক সময়ে সিপিএমের ‘লালদুর্গ’ ঝাড়গ্রামের চন্দ্রিতে এ দিন দোকানপাট খোলা ছিল। বিনপুর, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রামের মতো অনেক এলাকাতেই এ দিন একই ছবি দেখা গিয়েছে। নয়াগ্রামের খড়িকামাথানিতেও বুধবারের সাপ্তাহিক হাট বসেছিল। ঝাড়গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডে পণ্যবাহী লরি চলেছে অন্যান্য দিনের মতোই। |
ধর্মঘটের পক্ষে ও বিপক্ষে মিছিল ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
বুধবার বামেদের দখলে থাকা ঝাড়গ্রাম পুরসভায় এ দিন কাজে যোগ দেন বেশ কয়েকজন ‘ইচ্ছুক’ কর্মী। পুরপ্রধান সিপিএমের প্রদীপ সরকারের বক্তব্য, “কর্মীদের একাংশ হাজিরা খাতায় সই করে কাজে যোগ দিয়েছেন। আবার পুরসভার জল ও বিদ্যুৎ বিভাগের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন কর্মী কাজে যোগ দিলেও ধর্মঘটের সমর্থনে তাঁরা হাজিরা খাতায় সই করেননি।”
তবে এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও কয়েকটি এলাকায় পড়ুয়াদের হাজিরার সংখ্যা কম ছিল। সরকারি অফিস খোলা ছিল। ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সরকারি অফিসগুলিতে এ দিন কর্মীদের হাজিরা ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। কোনও কোনও অফিসে একশো শতাংশ হাজিরা ছিল।” তবে এ দিন ঝাড়গ্রাম ব্লক অফিসে হাজিরা সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। কয়েকটি ব্লক অফিসে দূরের কর্মীরা মঙ্গলবার রাতেই চলে এসেছিলেন। বেসরকারি বাস-ট্রেকার না চলায় বিভিন্ন ব্লক-সদর ও ঝাড়গ্রাম মহকুমা-সদরে পরিষেবা-প্রত্যাশী লোকজনের আনাগোনা কম ছিল। ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতে কেবলমাত্র পুলিশ ফাইলের কাজ হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে এড়াতে এ দিন জঙ্গলমহলের পথে ঘাটে সর্বত্রই পুলিশ মোতায়েন ছিল। পাশাপাশি, পুলিশ টহলও দিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। শিল্প কারখানাগুলি সচল ছিল।
ঝাড়গ্রাম শহরে একই রাস্তায় বনধ সফল করার জন্য বামপন্থীদের মিছিলের পাশাপাশি, বনধ ব্যর্থ করার জন্য তৃণমূলের মিছিল দেখা গিয়েছে। বনধ ব্যর্থ করার জন্য শহর ও বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকজনকে মোটর বাইক নিয়ে টহল দিতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষের দাবি, “জঙ্গলমহলের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখে বনধের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।” সিপিএমের পাল্টা দাবি, সাধারণ ধর্মঘট সফল। কয়েকটি জায়গায় জোর করেই দোকানপাট ও পেট্রোল পাম্প খোলানোর চেষ্টা করেন তৃণমূলের কর্মীরা। |
|
|
|
|
|