|
|
|
|
সাড়া নেই শিল্পশহরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
১১টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে দেশব্যাপী সাধারণ ও শিল্প ধর্মঘটের প্রথম দিনে সচল থাকল শিল্পের শহর হলদিয়া। শিল্পশহরের কল-কারখানার উৎপাদনে ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়েনি। এমনকী বন্ধ সফল করতে দিনভর বাম শ্রমিক সংগঠন সিটুর কোনও মিছিলও বেরোয়নি। উল্টে বন্ধের বিরোধিতায় শিল্পশহরের রাস্তায় মিছিল করেছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।
এ দিন মিৎসুবিশি, ইসিএল, হলদিয়া পেট্রোকেম, আইওসি, ধানসিঁড়ির মতো বড় কারখানায় উৎপাদন অনুযায়ী কর্মী উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক। বন্দরে ৯১ শতাংশ, এক্সাইডে ৯৫ শতাংশ এবং পুরসভায় ৯৭শতাংশ কর্মী উপস্থিতি ছিল। বন্দরের প্রশাসনিক আধিকারিক অমল দত্ত বলেন, “কাজকর্ম একেবারে স্বাভাবিক হয়েছে। ১২টি জাহাজ পণ্য খালাস করছে। কোনও অশান্তি নেই।” শিল্পশহরে ধর্মঘটের যে সর্বত্মক প্রভাব পড়েনি, তা স্পষ্ট হয়েছে সিটুর হলদিয়া সম্পাদক সুদর্শন মান্নার কথাতেও। তাঁর কথায়, “পুলিশি প্রচার, ছাঁটাই ও মারধরের হুমকির মধ্যেও বন্ধে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। ৩৫ শতাংশ ঠিকা ও ২০ শতাংশ স্থায়ী শ্রমিক কাজে যোগ দেননি। আমার আশঙ্কা শুক্রবার থেকে ছাঁটাই শুরু হবে।” “তৃণমূলের হুমকির জেরে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় কিছু কর্মী আসতে বাধ্য হয়েছেন” বলে দাবি করেছেন সিটুর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি নির্মল জানাও। |
বন্দরে স্বাভাবিক কাজকর্ম। —নিজস্ব চিত্র। |
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার অবশ্য হুমকি দেওয়া অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানার কর্মীদের সঙ্গে সিটু নেতাদের কোনও যোগাযোগ নেই। তাই এই সব মিথ্যা অভিযোগ করছে ওরা। বন্ধ একেবারে বিফলে গিয়েছে। একশো শতাংশ কাজ হয়েছে কারখানাগুলিতে।”
বামেদের দখলে থাকা হলদিয়া পুরসভায় এ দিন কর্মীদের হাজিরা ছিল চোখে পড়ার মতো। হলদিয়া মহকুমা এসসিজেএম আদালতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে বলে জানান মহকুমাশাসক শঙ্কর চক্রবর্তী। অধিকাংশ সরকারি অফিসই ছিল খোলা। হলদিয়া মহকুমাশাসকের কার্যালয়, ব্লক উন্নয়ন অফিস, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক।
তবে শহরের রাস্তায় নামেনি কোনও বেসরকারি বাস। হলদিয়া থেকে দিঘা, কলকাতা, মেচেদা, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, দুর্গাপুর-সহ প্রায় ৪০টি রুটে ২০০টি বেসরকারি বাস চলাচল করে নিত্য। এগুলির কোনওটিই এ দিন পথে নামেনি। অটো, ট্রেকারের মতো ছোট যানবাহনও কমই চলেছে। শুধুমাত্র গোটা দশেক সরকারি বাস ও শিল্প সংস্থাগুলির নিজস্ব বাস চলাচল করেছে। অধিকাংশ স্কুল খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। দুর্গাচক, মাখনবাবুর বাজার, মহিষাদল, সুতাহাটা বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট ছিল খোলা। তবে ব্রজলালচক, চৈতন্যপুর, চিরঞ্জীবপুর বাজারে বেশ কিছু দোকান বন্ধ ছিল। ধর্মঘট ঘিরে কোনও সংঘর্ষ, গ্রেফতারের খবর নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। |
|
|
|
|
|