পায়ের আঙুলে বেশ কয়েকটা অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্ল্যাটিনামের নখ বসানো হয়েছিল আঙুলে। অনেকটা সময় কাটাতে হয়েছিল হুইলচেয়ারে বসে। কিন্তু তখনও তিনি লড়াই ছাড়েননি। তখনও স্বপ্ন দেখতেন ভারতীয় দলে ফিরে আসার। আর এখন সেই স্বপ্নের অনেকটাই কাছে চলে এসেছেন শান্তাকুমারন শ্রীসন্থ। রঞ্জি ট্রফি, ইরানি ট্রফি, বিজয় হাজারেতে খেলে এখন আবার ক্রিকেটের মূল সরণিতে ফিরে এসেছেন কেরলের পেসার।
“খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এসেছি আমি,” চোটের প্রসঙ্গ উঠতে বলছিলেন শ্রীসন্থ, “বাঁ পায়ে ছ’টা আর ডান পায়ে ছ’টা অস্ত্রোপচার করতে হয়। তবে এই ঘটনা আমাকে মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। আমার মধ্যে ক্রিকেট খেলার জেদটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর মাঠে নামার জন্য কিন্তু আমি দারুণ পরিশ্রম করে চলেছি।” |
পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে মাঠে ফিরে শ্রীসন্থ হয়তো সবাইকে চমকে দিতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু যে ভাবে লম্বা স্পেল করে চলেছেন, তাতে শ্রীসন্থ নিজে খুশি। সবচেয়ে খুশি ইরানি ট্রফিতে সচিন তেন্ডুলকরকে বল করতে পেরে। “সচিন পাজি ক্রিজে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ চেগে গিয়েছিলাম। নিজের সেরা বোলিংটা করার চেষ্টা করছিলাম। আপনি যখন ফিরে আসার লড়াই করছেন, তখন সামনে এ রকমই এক জন কাউকে দরকার, যাকে দেখে উদ্দীপ্ত হবেন।”
ভারতীয় দলে এই মুহূর্তে অভিজ্ঞ পেসারের অভাব রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পরে আবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। শ্রীসন্থ অবশ্য এখনই জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে কিছু বলতে চান না। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কথা উঠতেই বলছিলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা সফর অনেক দেরি আছে। তবে আমাকে যখনই বলা হবে, তখনই বল করব। সেটাই আমার কাজ। বাকিটা আমার হাতে নেই। তাই সে সব নিয়ে চিন্তাও করি না।”
পারফরম্যান্সের জন্য যতটা না, তার চেয়েও বিভিন্ন বিতর্কের জন্য বেশি পরিচিত হয়ে পড়েছিল শ্রীসন্থের নামটা। এমন এক বোলার যে নিজের আবেগটা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারেন না। নতুন ইনিংসে কি সেই চেনা চেহারাটার বদল হবে? শ্রীসন্থের সাফ জবাব, “হুইলচেয়ারে বসে সময় কাটানোর সময় আমি বুঝেছিলাম ক্রিকেটকে কতটা ভালবাসি। বুঝেছিলাম, দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে আমি কতটা মরিয়া। শুনুন, কী করতে হবে না হবে, আমি সেটা জানি। সব ঠিকঠাক চললে এখনও চার-পাঁচ বছর ক্রিকেট আছে আমার মধ্যে। আমি জানি, লোকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল আমার পরিবার আর বন্ধুরা কী বলছে।” |