নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও ডানকুনি |
দুর্গাপুরের পরে এ বার ডানকুনি।
দুর্গাপুর-বাঁকুড়া হাইওয়েতে রেললাইনের উপর তৈরি হওয়া রোড ওভারব্রিজ রিমোটে উদ্বোধন করে কৃতিত্ব নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেল ও রাজ্যের যৌথ সহযোগিতায় নির্মিত হলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই ওভারব্রিজ নির্মাণের কৃতিত্ব কে নেবে, তার অলিখিত প্রতিযোগিতায় বাজি মেরেছিল রাজ্য সরকার। এ বার একই ছবি ডানকুনিতেও।
কার্যত রেলকে অন্ধকারে রেখে আগামিকাল সেই রিমোটেই ডানকুনির রোড ওভারব্রিজ উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ বেলায় পূর্ত দফতরের সচিব ইন্দিবর পাণ্ডে নমো নমো করে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার জি
সি অগ্রবালকে আমন্ত্রণ জানিয়েই দায়িত্ব সেরেছেন।
চলতি মাসের গোড়ায় মাটি উৎসবে পানাগড়ে গিয়ে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া হাইওয়েতে রেললাইনের উপরে নতুন সেতু উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রেলের মন্ত্রীসান্ত্রী, কাউকে কিছু জানানো হয়নি। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই ওই কাণ্ড করা হয়েছে বলে সে বার কটাক্ষ করেছিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। ডানকুনির ক্ষেত্রেও রেলকে কিছু না জানিয়ে এই আয়োজনে এ বার প্রায় হতবাক তিনি। বললেন, “এ ধরনের প্রকল্পে রেল এবং রাজ্য ৫০ শতাংশ করে দেয়। এটা সবাই জানে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ব্যবহারই, ওঁর পরিচয়। উনি ক্রমশ নিজেকে হাস্যকর করে তুলছেন।”
রাজ্যের পূর্ত দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার সময়ে দেশপ্রিয় পার্ক থেকে রিমোট কন্ট্রোলে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে ডানুকনি রোড ওভারব্রিজের (লেভেল ক্রসিং নং-৮) উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ছাড়া দলের অন্য নেতা-নেত্রীরা যথারীতি উপস্থিত থাকবেন ডানকুনির অনুষ্ঠানে। তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়, রত্না দে নাগ-এর। থাকার কথা রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বাতী খোন্দকর এবং ডানকুনি পুরসভার চেয়ারম্যান হাসিনা শবনমেরও।
রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, এই ধরনের রোড ওভারব্রিজ নির্মাণে সাধারণত অর্ধেক খরচ দিয়ে থাকে রেল। ফলে কার্যত রেলকে না জানিয়ে এ ভাবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে ফেলা অশোভন বলে মন্তব্য করেছে মন্ত্রক। অধীর চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে তির্যক আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, “মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলের মায়া ছাড়তে পারেননি।
তাই আমার পরামর্শ, উনি হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে ইউপিএ ফিরে আসুন। তাহলে কংগ্রেস ওঁকে ফের রেলমন্ত্রক ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করবে।” |