|
|
|
|
জালিয়ানওয়ালাবাগ লজ্জার, উপলব্ধি ক্যামেরনের
নিজস্ব প্রতিবেদন |
৯৪ বছর আগে একটি ঘটনার প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন কবিগুরু। সেই গণহত্যাকে আজ ‘গভীর ভাবে লজ্জাজনক’ আখ্যা দিলেন বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ জালিয়ানওয়ালাবাগে পা রাখেন ক্যামেরন। আর সেখানকার ‘ভিজিটরস বুক’-এ লেখেন, “ব্রিটেনের ইতিহাসে এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা, যাকে উইনস্টন চার্চিল দানবীয় বলেছিলেন। এখানে যা হয়েছিল, তা আমাদের ভোলা উচিত নয়। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, বিশ্বে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করে ব্রিটেন।” ব্যস ওইটুকুই। ১৯১৯ সালের এই গণহত্যাকাণ্ডের জন্য ব্রিটিশ সরকারের তরফে কিন্তু ক্ষমা চাননি ক্যামেরন। কেন? ৪৬ বছরের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জবাব, “আমরা যে ঘটনা নিয়ে আলোচনা করছি, সেটা আমার জন্মের প্রায় ৪০ বছর আগের। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তখনই ঘটনার নিন্দা করেছিল। আর ইতিহাসে ফিরে গিয়ে ক্ষমা চাওয়াটা এখন ঠিক হবে বলে আমি মনে করি না। ঘটনাটি স্মরণ করে তাকে যোগ্য মর্যাদা দেওয়া উচিত।” |
জালিওয়ানওয়ালাবাগে শহিদ বেদীতে ক্যামেরনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। ছবি: পিটিআই |
ষোলো বছর আগে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৯৭-এ স্বামী ফিলিপকে নিয়ে জালিয়ানওয়ালাবাগ গিয়েছিলেন। অতি সতর্ক একটি বার্তায় রানি তখন এই হত্যাকাণ্ডকে ‘দুঃখের’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী ‘ডিউক অফ এডিনবরা’ অবশ্য বিতর্ক উস্কে দেন। ফিলিপ বলেন, “জালিয়ানওয়ালাবাগে মোটেও হাজার খানেক মানুষের মৃত্যু হয়নি। ভারতীয়রা বাড়িয়ে বলেন।”
আজ সকালে জালিয়ানওয়ালাবাগে প্রথমে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ক্যামেরন। অমর জ্যোতির সামনে ফুলের স্তবক রেখে এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন। ঘুরে দেখেন বাগান চত্বর, যেখানে তৎকালীন ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিন্যাল্ড ই এইচ ডায়ারের নির্দেশে ভারতীয়দের উপর গুলি চলেছিল। প্রাচীরের গায়ে ব্রিটিশ পুলিশের গুলির চিহ্নও দেখানো হয় ক্যামেরনকে। তার পর তিনি যান সেই কুয়োর কাছে, যেখানে ঝাঁপ দিয়ে সে দিন আত্মহত্যা করেছিলেন পঞ্জাবের মেয়ে-বউয়েরা। টানা ২৫ মিনিট জালিয়ানওয়ালাবাগে ছিলেন তিনি।
ক্যামেরনের সফর উপলক্ষে আজ জালিয়ানওয়ালাবাগ চত্বর ঘিরে ফেলে পুলিশ। তাঁর কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি সাংবাদিকদেরও। বাগান থেকে বেরিয়ে ক্যামেরন পৌঁছন স্বর্ণ মন্দিরে। মাথায় নীল ফেট্টি। খালি পা। সঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল। প্রণাম সেরে লঙ্গরখানা ঘুরে দেখেন ক্যামেরন।
ক্যামেরন বললেন, “ব্রিটিশ জীবনে পঞ্জাবিদেরও বিশেষ অবদান রয়েছে। শিখদের ধর্মবিশ্বাসকে এখন ব্রিটেনেও শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। তাই স্বর্ণ মন্দির দেখতে ছুটে এসেছি। এই শহরের সঙ্গে ভাল আর মন্দ দু’রকম ইতিহাসই জড়িয়ে রয়েছে।” আসলে উত্তর ও পশ্চিম লন্ডন আর ইস্ট মিডল্যান্ডসের একটা বড় অংশে শিখদের বাস। সেখানকার প্রায় আট লাখ শিখের ভোট যায় ক্যামেরনের দল টোরিতে। সম্ভবত সে কথা মাথায় রেখেই টোরির নেতা বললেন, “পঞ্জাব সফর আমার গোটা ভারত সফরের সমান।” |
|
|
|
|
|