|
|
|
|
ব্রিগেডে খুশির ভিড় মানেই বনধ ব্যর্থ, জানালেন মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ব্রিগেডের মাঠে জনসমুদ্রের নিক্তিতে রাজনৈতিক দাপট জাহির করাটাই দস্তুর এ রাজ্যে। ডান বা বাম, শাসক কি বিরোধী নির্বিশেষে এই ট্র্যাডিশন দীর্ঘদিন চলে আসছে। বুধবার মহাকরণে দাঁড়িয়ে বনধ ব্যর্থ বোঝানোর অকাট্য প্রমাণ হিসেবেও ব্রিগেডের ছবিটাই তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
বনধে শহরের অবস্থা সরেজমিন দেখার পরেই তাঁর গর্বিত ঘোষণা, “ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে গিয়ে দেখে আসুন, প্রচুর লোক এসেছে। কেউ নিজের মতো খেলা করছে, কেউ কাগজ পড়ছে।” যদিও কাজের দিনের কলকাতার ভাবমূতির্র্র পক্ষে শহরের এই মেজাজ অনেকের কাছেই উজ্জ্বল বলে মনে হয়নি।
সত্যিই গড়ের মাঠে এই দুপুরের যেন পয়লা জানুয়ারির মেজাজ। ছুটির আমেজ। কেউ অফিস থেকে, কেউ বাড়ি থেকে চলে এসেছেন। কিন্তু কাজের দিন নষ্ট হল বলে হা-হুতাশ করতে দেখা গেল না কাউকেই। |
|
বনধের বিকেলে মায়ের সঙ্গে খেলা। বুধবার, ময়দানে। ছবি: দেবাশিস রায়। |
বাম আমলে শাসক দলের ডাকে একটি বনধে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বরকত গনি খান চৌধুরী আমজনতাকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, দলে দলে পায়ে হেঁটে বেড়াতে বেরিয়ে বনধ ব্যর্থ করুন। এ দিন বনধের ব্রিগেড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস যেন অনেকটা সেই ভাবনারই প্রতিফলন।
এ দিনের ব্রিগেড-জনতার অনেকেই নিজের মোটরবাইকে এসেছেন। অন্য দিনের তুলনায় কম বাস নামলেও কেউ কেউ বাসেই আসেন। খিদিরপুর, এন্টালি, পার্ক সার্কাস থেকে ময়দানে পায়ে হেঁটে আসার উৎসাহীরাও নগণ্য নন।
কিড স্ট্রিটের একটি জাহাজ কোম্পানির কর্মী অভিজিৎ রানা, অঙ্কুশ সুপ্পলরা অফিসে এসেছিলেন। তার পরে ছুটির মেজাজে দল বেঁধে দ্বিপ্রাহরিক ক্রিকেটের আসরে হাজির। কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকায় ক্রিকেট খেলতে হাজির দুই শিক্ষক বেনিয়াপুকুরের সুজাউদ্দিন আহমেদ ও রাজাবাজারের শাহজেব রিয়াজও। খিদিরপুরের ব্যবসায়ী সতীন্দ্র গুপ্ত রেসকোর্সের দিকে স্ত্রী অঞ্জলিকে নিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। বললেন, “কী করব? আমার কারখানার লেবাররা কেউ আসতে পারেননি। তাই এই সুযোগে বৌকে মোটরবাইকে করে একটু বেড়াতে নিয়ে এলাম।” বিবাদী বাগের বেসরকারি অফিসকর্মী নাদিম আখতারও সপরিবার হাওয়া খেতে বেরিয়েছেন। স্ত্রী তবাসুম বাড়ি থেকে আনা চাউমিন টিফিন-কেরিয়ার খুলে বেড়ে দিলেন। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ময়দানে একপ্রস্ত ব্যাডমিন্টনের পরে জমিয়ে পিকনিক।
ডেনমার্কের একটি পর্যটক দল এ দিন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখতে এসেছিল। ডেনিশ তরুণী লিজা ক্লাইন বললেন, “কলকাতার ফাঁকা রাস্তা দেখতে আমাদের বেশ লেগেছে!” |
|
|
|
|
|