|
|
|
|
পোস্টমাস্টার হাজির, চাবি নিয়ে উধাও কর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
সাতসকালে নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে চাবি হাতিয়ে নিয়ে গিয়ে ডাকঘর খুলতেই দিলেন না বন্ধের সমর্থক এক পোস্টম্যান। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কে।
ওই ডাকঘরের পোস্টমাস্টার অনুপম পোদ্দার সময় মতো এসে গিয়েছিলেন প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ উজিয়ে, নৈহাটি থেকে। তাঁর সঙ্গে আরও দু’-তিন জন কর্মী। পরিষেবা পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন একশোরও বেশি মানুষ। ডাকঘর খোলাতে উদ্যোগী হয়েছিল পুলিশও। কিন্তু শিল্প-ধর্মঘটের সমর্থক, ডাকঘরেরই এক পোস্টম্যান নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে দরজার সব ক’টি তালার চাবি নিয়ে চলে যান, যাতে কেউ সেখানে ঢুকতে না-পারে। আর লোহার সিন্দুকের চাবি থাকে যাঁর কাছে, সেই কোষাধ্যক্ষ মহিলাও সাফ জানান, বন্ধ সমর্থন করছেন বলে তিনি যাবেন না। তার আগে পুলিশ ঠিক করেছিল, সকলকে সাক্ষী রেখে তালা ভেঙে ডাকঘরে ঢোকা হবে। সেই মতো মূল ফটকের তালা ভেঙে ডাকঘর চত্বরে ঢোকাও হয়। কিন্তু লোহার সিন্দুকের চাবি কিছুতেই মিলবে না জেনে দরজার তালা আর ভাঙা হয়নি।
টালিগঞ্জের রিজেন্ট পার্ক ডাকঘর বুধবার তাই খোলা গেল না। পরিষেবা না পেয়ে ফিরে গেলেন বহু মানুষ। এর মধ্যে অনেকেই ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যাঁরা সঞ্চয় প্রকল্পের টাকার (এমআইএস) মাসিক কিস্তি তুলতে এসেছিলেন। বেআইনি ভাবে চাবি হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি যাদবপুর থানার ওসি-কে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন পোস্টমাস্টার অনুপমবাবু। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত পোস্টম্যানের নাম নূপুর কীর্তনীয়া আর কোষাধ্যক্ষ যে-মহিলা এ দিন কাজে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন, তাঁর নাম মঞ্জু সাহা। দু’জনের অসহযোগিতার বিষয়টিই পুলিশ জেনেছে। তারা বিষয়টি জানিয়েছে ডাক বিভাগের শীর্ষ মহল জিপিও কর্তৃপক্ষকে।
কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হবে কি না, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এ দিনই বেলগাছিয়া ডাকঘরে পাইকপাড়ার বাসিন্দা অনসূয়া দত্তের অভিজ্ঞতার পরে।
ডাকঘর খোলা থাকলেও, পোস্টম্যানেরা চিঠি বিলি করলেও এমআইএস-এর টাকা তুলতে যাওয়া ওই মহিলাকে বলা হয়, এ দিন ডাকঘরে কোনও কাজ হবে না। জিপিও-তে ফোন করে অভিযোগ জানান অনসূয়াদেবী। তাঁর কথায়, “জিপিও থেকে আমাকে বলা হল, বুধ ও বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ নেওয়া হবে না।”
এ দিকে, রিজেন্ট পার্ক ডাকঘরের সামনে এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন লোকজন। পরিস্থিতি সামলাতে যান ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত। তপনবাবু বলেন, “বহু মানুষ নানা প্রয়োজনে রিজেন্ট পার্ক ডাকঘরে এসে দেখেন, দরজায় তালা ঝুলছে। অথচ, পোস্টমাস্টার হাজির। তিনি বলছেন, তিনি অসহায়। মানুষের ক্ষোভ তো সঙ্গত।”
পোস্টমাস্টার-সহ ডাকঘরের কর্মীদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে শান্ত করেন কাউন্সিলরই, না-হলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারত। ওই ডাকঘরে রোজ গড়ে ১২-১৪ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়, প্রায় আট হাজার চিঠি জমা ও বিলি হয়। রোজ পরিষেবা পান প্রায় এক হাজার মানুষ। |
|
|
|
|
|